রোববার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২
ধর্ষণের পর হত্যা বলে ধারণা এলাকাবাসির

মসজিদের দোতলায় মিলল নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ!

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৫
আপডেট  : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৪:৩৩
মসজিদের দোতলায় মিলল নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ!
যায়যায়দিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের একদিন পর ময়না আক্তার নামে এক ৯ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাবলিপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিশু ময়না উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়া এলাকার প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে। সে হাবলিপাড়া মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।

মেয়েটিকে কে বা কারা ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে গেছে বলে পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা।

নিহত ময়নার মা লিফা আক্তার বলেন, শনিবার (৫ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ময়না নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে থাকেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয় এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে সারা এলাকায় জানানো হয় মেয়েটির সন্ধান চেয়ে। অবশেষে রবিবার সকালে মসজিদে পড়তে যাওয়া বাচ্চারা মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তার মরদেহ দেখতে পায়।

সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা ও শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান বলেন, আমি চা খেয়ে এসে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছি। এসময় দ্বিতীয়তলা এক শিক্ষার্থী এসে বলছে একটি মেয়ে পড়ে রয়েছে। এলাকাবাসীকে খবর দিলে তাঁরা এসে উদ্ধার করে। আমি নিচতলায় ছাত্রদের পড়েই আর দ্বিতীয়তলায় সালাউদ্দিন নামে একজন পড়ান।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, শনিবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিলো না। সকালে স্থানীয় মসজিদের মক্তবে শিক্ষার্থীরা আরবি পড়তে আসে। এসময় দোতলায় শিশু ময়নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

তিনি আরও জানান, শিশুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।

সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতে তাঁরা একটি নিখোঁজের জিডি করে। তখন আমাদের থানা পুলিশের একটি টিম খোঁজাখুজি করে পাই না। সকালে খবর পাই মসজিদের দ্বিতীয়তলা একটি মেয়ের মরদেহ পড়ে রয়েছে। পরে আমিসহ ঘটনাস্থলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞেসার জন্য মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেম আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে