শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিপুল অর্থসহ শামীম গ্রেপ্তার

এ অভিযান অব্যাহত থাক
নতুনধারা
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের ভেতর থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দেয়ায় যুবলীগের্ যাবের অভিযান অব্যাহত আছে। চলমান অভিযানে এবার বিপুল নগদ অর্থ, এফডিআর এবং সাত দেহরক্ষীসহর্ যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়া এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম। শুক্রবার সকালের শামীমের নিকেতনের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত হিসেবে শামীমের নাম আসে। এরপর শামীমকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া শুরু করের্ যাব। শামীম দেহরক্ষীসহ চলাফেরা করেন এবং তার বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিরও অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকের্ যাবের এই অভিযান দেশের সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান সময়োপযোগী হিসেবেও আলোচিত হচ্ছে সর্বত্র।

তথ্য অনুযায়ী, জি কে বি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক শামীম নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতেন। প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবেও তিনি পরিচিত।র্ যাবের তথ্য মতে, শামীমকে আটকের সময় বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে রাখা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার কাগজপত্র, নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার ও ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার পাওয়া গেছে। এছাড়া আটটি বৈধ অস্ত্র ও ২৩টি ব্যাংকের ৮৩টি চেকবইও জব্দ করা হয়েছে অভিযানকালে। অস্ত্রগুলো আপাতত বৈধ বলে মনে হলেও এগুলোর অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে এবং এফডিআরের মধ্যে ১৪০ কোটি টাকা তার মায়ের নামে। একজন সাধারণ নারীর এত টাকা থাকার বিষয়টি রহস্যজনক। তার নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এগুলো তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেনর্ যাবের কর্মকর্তা। এছাড়া শামীমের নিকেতনের এ-বস্নকে পাঁচ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর চারতলা ভবনের জি কে বি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের কার্যালয়ের যে বর্ণনা গণমাধ্যমে উঠে এসেছে তাও রহস্যজনক।

আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী দলীয় অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিকব্যবস্থা নেয়ার যে নির্দেশ দিয়েছেন তা প্রধানমন্ত্রীর 'ক্ষমতার অপব্যবহার, অপকর্ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স' নীতিরই বহির্প্রকাশ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, যারাই দাম্ভিকতা দেখাবে, মানুষকে কষ্ট দেবে, সরকারের সুনাম নষ্ট করবে তাদের এক চুলও ছাড় দেয়া হবে না। আমরাও লক্ষ্য করেছি, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নামে দুর্বৃত্তপনা ও নানান অপরাধমূলক কর্মকান্ড মাতৃসংগঠন আওয়ামী লীগই শুধু নয়- সরকারের জন্যও বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে দল অঙ্গসংগঠনগুলো কলুষমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।

গণমাধ্যমের তথ্যে জানা যায়, যুবলীগে সাঁড়াশি অভিযানের কারণে অনেক যুবলীগ নেতাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। আবার গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজিসহ অবৈধভাবে যারা নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তাদের সম্পদের খোঁজ করছেন গোয়েন্দারা। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনো অপরাধী যেন ছাড় না পায়, এ ব্যাপারে সরকার তথা প্রশাসন জোরালো পদক্ষেপ নেবেন- এমন প্রত্যাশাও দেশবাসীর। দল এবং অঙ্গসংগঠনগুলোকে ক্লিন করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। নষ্ট ও পচে যাওয়া সমাজে প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগের প্রশংসা করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইতিবাচক আলোচনা চলছে। অনেকেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন।

সর্বোপরি বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগেও বহুবার বলেছেন, অপরাধীদের কোনো দল নেই, তারা অপরাধী। তিনি রাষ্ট্র থেকে ঘুষ-দুর্নীতির মূলোৎপাটনের জন্য তার সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। ফলে প্রত্যাশা থাকবে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত হবে। দল ও অঙ্গসংগঠনের ভেতর থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থান অন্যদের শুধরে চলার ক্ষেত্রে সতর্কবাণী হিসেবে বিবেচিত হবে- এমনটিও আশা করা যায়। দলীয় দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে সঠিক ও সময়োচিত পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনমনে অভিনন্দিত হবেন- এমন প্রত্যাশা দেশবাসীর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67807 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1