বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
‘এবার উৎপাদন লক্ষ্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন’

মহাদেবপুরে চিনিগুঁড়া আতবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা 

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৮
মহাদেবপুরে চিনিগুঁড়া আতবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা 

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চিনিগুঁড়া আতব (সুগন্ধি) ধানের সোনালি শীষের সমারোহ। বাতাসে ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও আধাপাকা শীষ। সবমিলিয়ে এখন ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। শেষ মহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশের অন্যতম ধান-চাল উৎপাদনকারী এই উপজেলার কৃষকেরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে আতব চাষিদের বাড়ির আঙ্গিনা ভরে ওঠবে সোনালি ধানে। আগামী ৯-১০ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ধান ঘরে তোলার প্রহর গুনছেন তারা। এ চালের পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস ইত্যাদি খাবার আদিকাল থেকেই সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। এসব খাবার বাদ দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন কিংবা অনুষ্ঠান যেন অপূর্ণ থেকে যায়। বিয়ে জন্মদিনসহ সকল সামাজিক উৎসবে চিনি আতব চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২০২৪ খরিপ-২ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ১৫৮ হেক্টর জমিতে চিনি আতব ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে গোল্ডেন (আতব) ১৪৮ ও স্থানীয় জাতের ১১ হাজার ১০ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্য ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। উপজেলা পর্যায়ে দেশের সর্বাধিক সুগন্ধি ধান উৎপাদনকারী এ উপজেলায় এবার ৩৯ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন চিনি আতব ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কৃষকদের মতে, ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১২-১৪ মণ ধান পাওয়া যায়। এক বিঘা জমি চাষাবাদে খরচ হয় ৮-৯ হাজার টাকা। উপজেলার অন্তত ২০টি রাইসমিলে প্রতিদিন উৎপাদিত প্রায় এক হাজার মেট্রিক টনের অধিক চিনি আতব চাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।

উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের আজাহার আলী, আশরাফুল ইসলাম ও ঝলঝলি এলাকার ওমর ফারুক, রুহুলসহ ২০-২২ জন চাষি জানান, এবার গোল্ডেন ও স্থানীয় জাতের চিনি আতব ধান চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে সার-কীটনাশক প্রয়োগ করছেন; বাম্পার ফলনের আশা তাদের। বাজারে প্রতিমণ নতুন চিনি আতব ধান ১৫০০-১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। এমন দাম থাকলে কৃষকেরা লাভবান হবে বলেও জানান তারা।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জানান, উপজেলা পর্যায়ে দেশের সর্বাধিক চিনি আতব ধান মহাদেবপুরে চাষ হয়। মৌসুমের শুরু থেকে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন তারা। উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের প্রত্যাশা করছেন তিনি।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে