শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রতি দেড় মাসে উৎপদান ৪ হাজার কেজি

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
  ২২ মে ২০২৪, ১৩:২৭
ছবি-যায়যায়দিন

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ট্রাইকো কম্পোস্ট (জৈব সার) উৎপাদন করে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।

গত বছরের ডিসেম্বরে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে ও ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) কৃষি উন্নয়ন বিভাগের সহযোগিতায় উপজেলার পৌর সদরের রসুলপুর এলাকায় নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় হাউজে উৎপাদন করছেন ট্রাইকো কম্পোস্ট বা জৈব সার। হাউজ থেকে প্রতি ৪৫ দিন পরপর প্রায় ৪ হাজার কেজি জৈব সার সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন তিনি। যা থেকে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম। উৎপাদিত এ সার তিনি নিজ কৃষি জমিতে ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যবহার করছেন স্থানীয় কৃষকরাও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষি উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলামের বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট ছোট পাকা চৌবাচ্চা হাউসে ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরি করা হচ্ছে। গোবর, মুরগির বিষ্ঠা, সবজির উচ্ছিষ্ট, কচুরিপানা, কাঠের গুঁড়া ও চিটাগুড় মিশ্রন স্তুব করা হয়েছে হাউজে। ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে এ জৈব পদার্থ পঁচে ট্রাইকো কম্পোস্ট সারে পরিণত হবে। এক টন মিশ্রণ পঁচাতে ৫০০ মিলি ট্রাইকো ড্রামা অণুজীব মেশানো হচ্ছে হাউজে হয়। এদিকে শহিদুল ইসলামের দেখাদেখি জৈব সার উৎপাদনে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।

এ বিষয়ে উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আইডিএফের সহযোগিতায় নিজ বাড়ির এবং আশপাশের বসতবাড়ির শাক-সবজি ও ফলমূলের উচ্ছিষ্ট, গোবর, মুরগির বিষ্ঠা ও কচুরিপানা সংগ্রহ করে ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরী করছি। চলতি বছরের শুরু থেকে এই সার নিজেও ব্যবহার করছি এবং স্থানীয় কৃষকদের নিকট বিক্রি কর সার বাড়তি উপার্জন করছি। এই প্রক্রিয়ায় খরচের তুলনায় লাভ বেশি। প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার জৈব সার বিক্রি করতে পারছি। ভবিষ্যতে আরও বাড়ানোর আশা আছে।'

আইডিএফের মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিথুন দাস বলেন, 'এই উপজেলায় প্রথমবারের মতো আগ্রহী কৃষক শহিদুল ইসলামকে ট্রাইকো কম্পোস্ট বা জৈব সারের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সববধরনের সহযোগিতাও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সফলভাবে তিনি উৎপাদন করছেন। ট্রাইকো কম্পোস্টের মূল উপাদান ট্রাইকোড্রামা নামক একধরনের উপকারী ছত্রাক। এছাড়াও কম্পোস্ট সার তৈরির সময় হাউস থেকে নির্গত তরল ট্রাইকো লিচেট (তরলজাতীয়) সংগ্রহ করে বিভিন্ন সবজি ও পানের বরজে ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনে এ সার ব্যবহার করে ভালো ফলন পাচ্ছেন এলাকার কৃষকেরা।'

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ আলী জানান, 'ট্রাইকো কম্পোস্ট বা জৈব সার সার মাটির গঠন উন্নত করে পানি ধারণক্ষমতা বাড়ায়। উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর ছত্রাক ও বিভিন্ন রোগ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ৪০-৬০% রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমায় যা নিরাপদ ফসল উৎপাদনসহ ফসলের গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।'

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে