মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম কমলেও প্রভাব নেই খুচরা বাজারে

নুুরউদ্দীন খান সাগর, চট্টগ্রাম
  ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৬:০০

চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমলেও এর প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। মজুদ এবং সরবরাহ পর্যাপ্ত হওয়ায় তাছাড়া ভোক্তাদের চাহিদা তেমন না থাকায় আমদানিকারকরা ভোগ্যপণ্যের দাম কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় প্রতি বছর রমজানে বেশি চাহিদার ভোগ্যপণ্য ছোলা, খেজুর, পাম তেল, সয়াবিন তেলসহ বেশ কিছু ভোগ্যপণ্যের দাম কমেছে পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলীতে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম মনপ্রতি সর্বোচ্চ ৪শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ার পর এখন আবার কমছে। তাছাড়া চিনির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। কিন্তু পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে নেই। বরং উলটো চিত্র। খুচরা বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।

চাহিদার শীর্ষ থাকা অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ছোলার দাম মনপ্রতি কমেছে ৫শ টাকা। একইভাবে চাহিদা কমে যাওয়ায় চিনির দামও কিছুটা কমে গেছে। পাইকারি বাজার গুলোতে একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিনের দাম মনপ্রতি ৩০০ টাকা কমেছে। পাম তেলের দামও মনপ্রতি কমেছে ২৫০ টাকা। ডাল জাতীয় পণ্যের দামও কমেছে। দু-সপ্তাহ আগে কেজিপ্রতি চনার ডাল ৮০ টাকা বিক্রি হলেও তা বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায়। ৬২ টাকার মটর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকায়। ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া খেসারির ডাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা। শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৩২ থেকে ৩৩ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৯ থেকে ৩০ টাকা।

পাহাড়তলী বাজারে ব্যবসায়ীরা বলেন রমজানের সময় ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল জাতীয় পণ্য এবং পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। তাই রমজানের আগেই পাইকারি বাজারে এসব পণ্য বিক্রির চাপ বাড়ে। কিন্তু এবারে রমজানের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে গেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে সামনে দাম আরও কমবে। বাজারে পর্যাপ্ত মাল আছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় দিন দিন পণ্যের দাম কমে যাচ্ছে।

পাইকারি বাজারে ভোগ্য পণ্যের দাম কমতে থাকলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব তেমন নেই। খুচরায় অনেক পণ্য এখনও আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামের নগরীর বেশির ভাগ খুচরা বাজারে এখনো ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ ৩৮ আর ভারতীয় ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ আর পাম তেল ১৩০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে দাম কমারা প্রভাব খুচরা বাজারে বিন্দু মাত্রও নেই। সাধারণ মানুষকে আগের মতোই বেশি দামে ভোগ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে।

পাহাড়তলী কাচাঁ বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, রমজান মাসে সবজি ও মাছ, মাংসের দামও চওড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৭০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি এখন ২০০ টাকা, কমেনি সোনালি মুরগির দাম প্রতিকেজি ৪০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি। পাশাপাশি ডিমের ডজন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহে আগে মাঝারি ও ছোট মানের লেবু হালিপ্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। টমেটো প্রতিকেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৩৫ টাকা। প্রতিকেজি গাজর ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া শসার দাম এখন ৫০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায়। তাছাড়া ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া কঠিন। সজিনা প্রতিকেজি ১০০ টাকা। প্রতিকেজি বরবটি ৮০, শিম ৭০, পটোল ৮০, মুলা ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, ফুলকপি ৫০, ঢেঁড়স ও তিত করলা ৯০, লতি ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ঝিঙা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর ভোক্তা এবং ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের মতে, ঠিকমতো বাজার তদারকি না হওয়ায় এমনটা হচ্ছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে