শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

মুরগি ও ডিমের দাম চড়া, অস্থির সবজির বাজার

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ মে ২০২৪, ১০:০৮
আপডেট  : ১৮ মে ২০২৪, ১০:১৮
-ফাইল ছবি

রাজধানীর বাজারে এখনো কমেনি ডিম ও মুরগির দাম। গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া সোনালি মুরগির অস্বাভাবিক দাম এ সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে বাড়তির দিকেই রয়েছে ডিমের বাজার। ক্রেতাদের অস্বস্তি রয়েছে সবজির দামেও। অন্যদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলেও বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়নি।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দামে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এ দিনও গত সপ্তাহের চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে পোলট্র্রি পণ্যে। বিশেষ করে ডিমের দামে ক্রেতা অস্বস্তি চরমে। সপ্তাহ ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ডিমের হালি বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকার ওপরে এবং ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকায়। প্রায় অপরিবর্তিত দামে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকার ওপরে।

এদিকে ডিম মুরগির এমন অস্বাভাবিক দামে ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ ক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান, শুক্রবার বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় স্বাভাবিকের তুলনায় সোনালি মুরগির দাম একটু বেশি থাকে। তবে একমাস ধরেই সরবরাহ সংকটে মুরগির বাজারে অস্থিরতা চলছে। তবে ডিমের বাজারে কোনো সরবরাহ সংকট নেই। বিক্রেতাদের অভিযোগ অদৃশ্য এক সিন্ডিকেটে ডিমের বাজারে সংকট চলছে।

অন্যদিকে সাধারণ খামারিরা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে এর আগে প্রতি পিস ডিম তারা ২ থেকে ৩ টাকা লোকসানে বিক্রি করেছেন। এখন দাম বেশি তাই উৎপাদন খরচের কাছাকাছি দাম পাচ্ছেন। খামারিরা এখন প্রতি পিস ডিম ৮ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করলেও পাইকারি বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা এবং খুচরা বাজারে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১২ টাকার ওপরে।

মূলত ঢাকার ডিমের বড় দু’টি পাইকারি বাজার থেকে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত হয়। এর একটি তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি ডিমের বাজার, অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারা দেশে মেসেজের মাধ্যমে তারা (তেজগাঁও আড়ত মালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করে। হুট করে তারা দাম কমিয়ে দিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করে, এরপর আবার দাম বাড়িয়ে বাজারে ইচ্ছা অনুযায়ী সরবরাহ করে এ সিন্ডিকেট। এভাবে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

এদিকে বাজারে সবজির চড়া দাম প্রায় তিন থেকে চার সপ্তাহ ধরে। এ দিনও প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকার ওপরে। এর মধ্যে বেগুন, কাঁকরোল ও বরবটির কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা; পেঁপে, ঝিঙা, ধুনদুল, রেখা, ঢ্যাঁড়শ ও টমেটোসহ করলা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়াও প্রতি কেজি কাঁচামরিচে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা দরে। এছাড়াও বাড়তির দিকেই রয়েছে পেঁয়াজসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিকে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা দরে।

এছাড়া বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওড়ের মাছ একেবারেই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। চাষের মাছও এ দিন বিক্রি হয়েছে চড়া দামে। বিক্রেতারা জানান, মাছ বাজারে ক্রেতা চাপ বৃদ্ধিতে সব ধরনের মাছের দামেই কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এ দিন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকার ওপরে। ৮০০ গ্রামের ওপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮০০ এবং এক কেজির ওপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৪০০ থেকে ২৮০০ টাকা দরে। মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ টাকা, বড় পাঙাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কই (ছোট) ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৩০ টাকা, শিংমাছ ৫০০ টাকার ওপরে, শোলমাছ ৮০০ টাকা, বড় পাবদা ৫০০, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬০০ থেকে ৭০০’ টাকা, মলামাছ ৬০০ টাকা, বাইলা ৮০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারে বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, গুঁড়ামাছ ৩০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ টাকা, গলদা ৯০০ এবং রূপচাঁদা ১২০০ টাকা দরে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে