বৈশ্বিক অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেও বাংলাদেশে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) থেকে ১.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ছাড় পাওয়ার পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩১.৬ বিলিয়ন ডলারে, যা সাম্প্রতিক মাসগুলোর তুলনায় অনেক ভালো।
এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়েছে। ব্যবসায়ী মহল, বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে।
এরইমধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেন, “এই রিজার্ভ কেবল অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান নয়, এটি জাতির আত্মবিশ্বাস ও প্রতিরোধের প্রতীক।
সরকার এখন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রিজার্ভ বৃদ্ধি শুধু ঋণের প্রভাব নয়, বরং সরকারের কঠোর আর্থিক ব্যবস্থাপনা, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং ডলারের বাজারে স্বচ্ছতা ফেরানোর ফলাফলও এতে যুক্ত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়ছে। ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ তুলনামূলক স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। রপ্তানি খাতেও ধীরে ধীরে গতি ফিরছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ গত দুই মাসে ঊর্ধ্বমুখী, যা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এই ধারা বজায় থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছাতে পারে।
তবে এর জন্য প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার, উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি।
সরকারের অর্থনৈতিক টিম বলছে, রিজার্ভ বাড়া মানে কেবল বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় নয়—এটি দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, বৈশ্বিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার ঘুরে দাঁড়ানোর ঘোষণা।