তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরের কাছাকাছি অবস্থান করছে ডলারের বিনিময় হার। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল স্বর্ণের দাম বেড়েছে। মূল্যবান ধাতুটির বাজারের বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে প্রকাশ হতে যাওয়া মার্কিন কর্মসংস্থানবিষয়ক একাধিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছেন। এ তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার কমানোর পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন তারা। খবর রয়টার্স।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম বেড়েছে দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ৩ হাজার ২৯৪ ডলার ৫৭ সেন্টে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (কোমেক্স) স্বর্ণের দাম দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০৫ ডলার ৫০ সেন্টে।
উল্লেখ্য, ডলারের বিনিময় হার এখন ২০২২ সালের পর সর্বনিম্ন স্তরের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ডলারের বিনিময় হার কমে গেলে অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্য স্বর্ণ তুলনামূলক সস্তা হয়ে ওঠে। এ সময় চাহিদা বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে দামে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বৈশ্বিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভান্নি স্তাওনোভো বলেন, ‘বর্তমানে স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে দুটি উল্লেখযোগ্য কারণ ভূমিকা রাখছে। একটি হলো ডলারের নিম্নমুখী বিনিময় হার। আরেকটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডের ওপর সুদহার কমানোর চাপ।’
এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এমন কাউকে ফেডের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করবেন না, যিনি সুদহার কমানোর পক্ষে নয়।
মার্কিন অর্থনৈতিক তথ্যের দিক থেকে স্বর্ণ খাতের বিনিয়োগকারীরা বুধবার প্রকাশিত হতে যাওয়া এডিপি এমপ্লয়মেন্ট রিপোর্ট ও বৃহস্পতিবারের নন-ফার্ম পেরোল প্রতিবেদন প্রকাশের অপেক্ষায় আছেন। এসব তথ্য ফেডের ভবিষ্যতে নীতির বিষয়ে ইঙ্গিত দিতে পারে।
স্তাওনোভো এ বিষয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক তথ্যে আরো মন্দার ইঙ্গিত পাওয়া গেলে ফেডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা বাড়বে।’
বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ফেড সেপ্টেম্বর থেকে ৬৬ বেসিস পয়েন্ট হারে সুদহার কমাতে পারে। উল্লেখ্য, সুদহার কমে গেলে স্বর্ণের বিনিয়োগ চাহিদা বাড়ে। এতে ঊর্ধ্বমুখী হয় মূল্যবান ধাতুটির দাম।
অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ৩৬ ডলার ১৬ সেন্টে। প্লাটিনামের দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬৪ ডলার ৭২ সেন্টে। এ সময় প্যালাডিয়ামের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ১ হাজার ১৫০ ডলার ৩০ সেন্টে।