মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকদের পাশাপাশি গুচ্ছের বিপক্ষে শিক্ষার্থীরাও

ইবি প্রতিনিধি
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ১১:১৪

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চালু করা হয়। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) দীর্ঘদিনের চিরায়ত ভর্তি প্রক্রিয়ার পরিবর্তে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার সমন্বয়হীনতা, দীর্ঘসূত্রিতা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াকে আরো জটিল করে তোলে। এমনকি গণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ফাঁকা আসন পুরণ করতে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ।

এতে করে মেধার বিকাশে ঘাটতি ও সেশনজটের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রকার আঞ্চলিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। গত বুধবার শিক্ষকদের সকল রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে বসেছিলেন ইবি উপাচার্য। এতে শুধুমাত্র একজন প্রফেসর বাদে বাকী সকলেই গুচ্ছের বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি গুচ্ছের বিপক্ষে শিক্ষার্থীরাও। তাদের দাবি, যেকোন মূল্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আবার শুরু হোক।

ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লেখাপড়া ও ক্যারিয়ার নিয়ে মানসিক চাপ বিরাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাসনিম তারিন বলেন, আমার ভর্তি হয়েছিলাম আগস্টের মাঝামাঝিতে কিন্তু ভর্তি কার্যক্রম শেষ হতে প্রায় ৬ মাস লেগে গেছে। এতে দীর্ঘদিন মানসিকভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যেখানে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ৫ থেকে ৬ মাস আমাদের থেকে এগিয়ে গিয়েছে সেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা হয় শিক্ষার্থীদের একটু ভোগান্তি কম হবে, সাথে ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো হবে।

একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, ২২ টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল। কিন্তু এখানে প্রচুর সমন্বয়হীনতা ছিল। আমি নিজে এখানে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা নেয় তাহলে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি ভালো মানের ছাত্র খুঁজে পাবে। ফলে প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার পছন্দের বিদ্যাপীঠ খুজে পাবে।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ঈদুল হাসান বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ফলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। গণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ফাঁকা আসন পুরণ হচ্ছেনা। এতে সময় আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেমিস্টার শেষ করে ফেলছে সেখানে আমরা ক্লাসই শুরু করতে পাচ্ছিনা। এতে আমাদের সেশনজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হবে এটা কখনো চাই না। গুচ্ছের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে কিনা সেটার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখনও পর্যন্ত আামাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি। উপাচার্য স্যারও শিক্ষকদের পক্ষে আছেন বলে জানিয়েছেন।

ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, গুচ্ছের সমন্বয়হীনতার কারণে জটিলতাগুলো তৈরি হয়েছে। যদি পরিকল্পনা করে সমানে আগাতো তাহলে এতো দীর্ঘ সময় লাগতো না। এটার কারণেই শেষের দিকে এসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মতো করে করেছে। পরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আসন ফাঁকা রেখে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে