শিক্ষা

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে হওয়া সহিংসতার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে ভাইয়ের সন্ধান চেয়ে মানববন্ধনে প্ল্যাকার্ড হাতে ছোটবোন উম্মে খায়ের ঈদি কান্নায় ভেঙে পড়ে। সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভাইয়ের সন্ধান চান। তখন অন্যদের চোখে পানি টলমল করতে থাকে।

জানা যায়, গতকাল রোববার (২৮ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে আরিফ সোহেলকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে আমবাগান এলাকার বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আরিফের ছোটবোন উম্মে খায়ের ঈদি।

ঈদি জানান, ঠিক রাত ৩টা ৫০ মিনিটে সাদা পোশাকে ৮ থেকে ১০ জন মানুষ আমাদের বাসার নিচে এসে ডাকাডাকি শুরু করেন। আমার বাবা তাদের পরিচয় জানতে চান। তারা পরিচয়পত্র দেখিয়ে ডিবি পরিচয় দেন। আমরা দরজা খুলতে না চাইলে তারা দরজা ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। দরজা খুলে দিলে তারা ভেতরে এসে সবার ফোন নিয়ে নেন।

এ সময় তারা ভাইয়ের কম্পিউটার চালু করে কিছু ছবি নেন। পরে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আরিফ ও আমার বড় ভাইকে একটা গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। তবে তারা আমার বড় ভাইকে সাভারের গেন্ডা এলাকায় ছেড়ে দেয়। এরপর থেকে আরিফের খোঁজ পাচ্ছি না।

জানা গেছে, আরিফ সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ঢাকা জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবির (উত্তর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ডিবি পরিচয়ে রাতে কাউকে তুলে আনার বিষয়টি আমার জানা নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার কোনো সমন্বয়ককে আমরা আটক বা গ্রেপ্তার করিনি।

রোববার সকালে তার পরিবার ডিবি কার্যালয়ে গেলেও সেখান থেকে জানানো হয় আরিফ সোহেল তাদের কাছে নেই।

ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের ‘হেফাজতে’ থাকা অবস্থায় কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছয়জন যে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন সেখানেও আরিফকে দেখা যায়নি।

সোহেলের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী জুয়েল জানান, ‘ভাইয়াকে যখন ভোর রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তারা বলেছিল তাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে যাবে। কিন্তু তখনই তার ফোন নিয়ে নেয়। আমরা ফোনেও তাকে পাইনি। ডিবি কার্যালয়ও বলছে নেই। ওর ব্যাপারে কোনো তথ্য পাইনি।’

আরিফ সোহেলকে আটকের বিষয়টি সাভারের আশুলিয়া থানা থেকেও এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। সূত্র : বিবিসি

যাযাদি/ এস

যাযাদি/ এস