পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বরিশাল ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীকে স্থানীয় এক ব্যক্তি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিসিপ্লিনের ১১তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন মিঠু (৩৫) নামের এক স্থানীয় ব্যক্তি, যিনি একসময় ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।
জানা গেছে, ওই ব্যক্তি তাকে যথাযথ সম্মান না করার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীর গালে চড় মারেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং লাঠি নিয়ে চড়াও হন।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে তারা উপজেলা চত্বর অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর বিষয়টি অবহিত করেন। পরে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন ঘেরাও করে বিচারের দাবি জানান। তবে ইউএনও বাসভবনে উপস্থিত না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) সনজিত ঘটনাস্থলে আসেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। অভিযুক্ত মিঠুর বাড়িতে পুলিশ গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডিভিএম ডিসিপ্লিনের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান রাহাত বলেন, "আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, তার নিশ্চয়তা চাই। যতদিন পর্যন্ত সুষ্ঠু বিচার না হবে, ততদিন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখব।"
একই অনুষদের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, "ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। সেই লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের গেট নির্মাণ করা জরুরি।"
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ফারহান সাদিক রাহাত বলেন, "তুচ্ছ কারণে অভিযুক্ত মিঠু আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমি চাই, সকল শিক্ষার্থীর সামনে সে ক্ষমা চাইবে।"
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসের সহকারী প্রক্টর ডা. আনোয়ার জাহিদ বলেন, "শিক্ষার্থীদের ওপর এ ধরনের হামলা দুঃখজনক। প্রক্টরিয়াল বডি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) সনজিত বলেন, "অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা অভিযুক্ত মিঠুর বাড়িতে যাই, তবে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবার সমাধানের পথে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সমন্বয়ে সমাধান করা হবে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিবার ক্ষমা চেয়েছে। তবে অভিযুক্ত মিঠু এখনো সামনে আসেনি। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা সতর্ক থাকব।"
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এখন থেকে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যাযাদি/ এমএস