শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

ডাকসু নির্বাচন : সক্রিয় শিবির, ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

ঢাবি প্রতিনিধি
  ১৯ জুন ২০২৫, ২১:৫৫
ডাকসু নির্বাচন : সক্রিয় শিবির, ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের লগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) দেশের ইতিহাসে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিল।

সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ১১ মার্চ, যা ছিল টানা ২৮ বছর পরের একটি ঐতিহাসিক আয়োজন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২০২০ সালের ২২ জুন সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এরপর থেকে ডাকসু নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয়নি।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত বছরের ৫ আগস্টের পর ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অনশনের মুখে অবশেষে গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ১০ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়।

কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাবি প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে ক্যাম্পাসে সক্রিয় হচ্ছে ছাত্রসংগঠনগুলো। নির্বাচন কেন্দ্রীক কিছু সংগঠনকে ইতিমধ্যে কাজ করতে দেখা গেছে।

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘‘ডাকসু নিয়ে এখনো তেমন কোন দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ছাত্রদল থেকে কারা নির্বাচনে আসছেন তা এখনো ঠিক করা হয়নি।’’

ঢাবি শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‌“ঢাবি প্রশাসন ১০ সদস্যে কমিশন গঠনসহ যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আশানিয়া দিক।

আমরা এটিকে সাধুবাদ জানাই। ছাত্রসংসদ কার্যকর করার ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। আমরা চাই ক্যাম্পাসে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হোক।

শিক্ষাঙ্গনে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক। এমনকি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব তৈরি হোক। এতে তাদের দাবি-দাওয়াগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে।”

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, “ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সময়ের চাহিদার আলোকে নারী ও সমতা বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক পদসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা।

ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আমরা এই যৌক্তিক প্রস্তাবনাগুলো উত্থাপন করেছিলাম।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “আমরা এতোদিন ডাকসু নিয়ে অনিশ্চয়তার ভেতরে ছিলাম। কিন্তু এখন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আশা করছি অতি দ্রুত বাকি কাজগুলো প্রশাসন করবে।”

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাবি শাখা সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে কমিশনের সঙ্গে আমরা শিগগিরই দেখা করব। এ ছাড়াও সর্বশেষ ডাকসুর নির্বাচনে আমরা একক প্যানেল দিয়েছিলাম, এবারও তা হবে। তবে বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন হলে জোটগত প্যানেলের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘‘ডাকসু নিয়ে আমরা এখনো কোন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিইনি। তাছাড়া আমরা ডাকসুতে অংশগ্রহণ করব কিনা সেটাও একটা বিষয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জাম ফরিদ বলেন, “ডাকসু নির্বাচন গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অন্যতম প্রধান শর্ত। আমাদের সংগঠন ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে সবসময় সোচ্চার ছিল। আমরা আমাদের তরফ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি আরমানুল হক বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তবে জাতীয় নির্বাচনের যেন ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি শাখার সভাপতি নাজিয়া হাসান রাশা বলেন, “একক প্যানেলে ডাকসু নির্বাচনের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে নির্বাচন পরিস্থিতির আলোকের বাম সংগঠনগুলো মিলে জোট প্যানেল করা হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে