"কুয়েতের জন্য বাংলাদেশের জনগণের অন্তরে রয়েছে বিশেষ স্থান' কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান স্থানীয় হোটেল মিলেনিয়ামে আয়োজিত সংবর্ধ না অনুষ্ঠানে একথা উল্লেখ করেন।
৫২তম বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে প্রতি রক্ষা শাখা, বাংলাদেশ দূতাবাস, কুয়েত কর্তৃক ২৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যায় স্থানীয় মিলেনিয়াম হোটেল এন্ড কনভেনশন সেন্টারে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আযোজন করা হয়। সংবর্ধ নাঅনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর ত্রিগেডিয়ার জেনারেল লাফি মালফি আলমুতাহরী। অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি কূটনীতিক ও সামরিক এ্যটাশেগন, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিদেশি অতিথিসহ কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীন উপস্থিত ছিলেন।
হোটেল মিলেনিয়ামে আযোজিত সংবর্ধ নাঅনুষ্ঠানটি দূতাবাসে নিয়োজিত ডিফেন্স এ্যাটাশে ত্রিগেডিয়ার জেনারেল মুঃ হাসান উজ জামান এর সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ এবং কুয়েতের জাতীয় সংগীত বাজানোর মধ্য দিয়ে এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান তার বক্তব্যে উল্লেখ্য করেন যে, 'সশস্ত্র বাহিনী দিবস' বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের এবং বাংলাদেশের আপামর জনগণের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিবস বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয় মুক্তিযুদ্ধের সময় তাই বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জনগণের সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে পরিচিত। আর জনগণের কাছ থেকে আস্থা এবং এই স্বীকৃতি অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবদান। তিনি বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন দূর্যোগ মোকাবেলা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন এবং কুয়েত পূর্ণর্গঠনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি ফোর্সে সগোল ২০৩০ অনুসারে সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তিন বাহিনী প্রধান এবং প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। ডিফেন্স এ্যাটাশের বক্তব্যের পরে মান্যবর রাষ্ট্রদূত। মেজর জেনারেল মোঃ আশিকুজ্জামান তার মূল্যবান বক্তব্যে কুয়েত এবং বাংলাদেশকে একটি ট্র্যাটেজিক সম্পর্কের অংশীদার বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন যে এই দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য ও ইতিহাস নির্ভর। মান্যবর রাষ্ট্রদূতের পরে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি লাফি মালফি আলমুতাইরী। তিনি কুয়েত পূর্ণ গঠনেনয়োজিত বাংলাদেশ মিলিটারী কন্টিনজেন্ট এর প্রশংসা করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ২১শে নভেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে একটি গৌরবজ্জ্বল দিন। এই দিনে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী 'সশস্ত্র বাহিনী" হিসাবে ঐক্যবদ্ধভাবে আক্রমন সূচনা করে। যে কারণে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের জনগণের সাথে নিবিড় সম্পৃক্ততায় গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ
শুধুমাত্র বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ একটি সুপরিচিত নাম। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের এক নম্বর শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। ১৯৯০/১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি বৃহৎ দল বহুজাতিক বাহিনীর অংশ হিসেবে অপারেশন "ডেজার্ট স্টর্ম' এ অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ ১৯৯১ সাল হতে বন্ধুপ্রতীম কুয়েতের পূর্ণ' গঠনেবিভিন্ন সহযোগিতা যেমন মাইন অপসারণ, এক্সপ্লোসিভ অর্ড ন্যান্স ডিসপোজাল, মেডিকেল সার্ভিস প্রশিক্ষক, প্রশাসনিক ইত্যাদি সহায়তা দিয়ে আসছে। অপারেশন কুয়েত পুনগঠন কার্য ক্রম চলাকালে এযাবৎ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৯৬ জন সদস্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। একই সাথে কুয়েতের সাথে বাংলাদেশের সামরিকসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল- আহমদ আল-জবের আল-সাবাহ এবং তার সরকারকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
যাযাদি/ এস