বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মিশরের কায়রোতে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের ঈদ পুনর্মিলনী 

জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান
  ১১ জুন ২০২৫, ০৯:২৭
আপডেট  : ১১ জুন ২০২৫, ১০:১৩
মিশরের কায়রোতে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের ঈদ পুনর্মিলনী 
দ্যা ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর আল-আজহার গ্র্যাজুয়েটস বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ পুনর্মিলনী ও নাত সন্ধ্যা

দ্যা ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর আল-আজহার গ্র্যাজুয়েটস বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ পুনর্মিলনী ও নাত সন্ধ্যা। ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ, কুরবানির আত্মদানের শিক্ষা ও প্রবাসে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই হৃদয়ছোঁয়া অনুষ্ঠানে শতাধিক শিক্ষার্থী একত্রিত হন।

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় পবিত্র কালামুল্লাহ তিলাওয়াতের মাধ্যমে। কুরআনের আয়াত ধ্বনিত হয় কায়রোর আকাশে, যার আবেশে শীতল হয়ে ওঠে প্রবাসী হৃদয়। এরপর একে একে সুললিত কণ্ঠে হামদ ও নাত পরিবেশন করেন ছাত্ররা, যা শ্রোতা-দর্শকদের অন্তরে রেখে যায় অপূর্ব ছাপ।

1

তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীতের আবেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয় আলোচনাসভা। বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে তুলে ধরেন ঈদের প্রকৃত তাৎপর্য, আত্মত্যাগের মহিমা এবং প্রবাসে পরিবার থেকে দূরে ঈদ উদযাপনের অভিজ্ঞতা। আলোচকরা ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানান — কষ্টকে শক্তিতে রূপান্তর করে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে আলোকিত ভবিষ্যতের নির্মাতা হিসেবে।

বক্তব্য রাখেন কাজী শামসুদ্দিন, পরিচালক, দ্যা ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর আল-আজহার গ্র্যাজুয়েটস বাংলাদেশ (মিশর শাখা); মুহাম্মদ আফসার, সিনিয়র সদস্য, ইত্তেহাদ; এবং মুহাম্মদ রাকিবুল হাসান, সিনিয়র সদস্য, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত মিশর। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন মুনির আল-আজহারী।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতিমান ইসলামী চিন্তাবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, মুফতি আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক (হাফি.), ভাইস-প্রিন্সিপাল, কাদেরিয়া তৈয়্যাবিয়া কালিম মাদ্রাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। তাঁর বক্তব্যে তিনি আলোচনা করেন ইলমের গুরুত্ব ও প্রকারভেদ, নবী মূসা (আ.)-এর ইলম অর্জনের ইতিহাস, তাকওয়া ও আত্মোৎসর্গের অনুপম দৃষ্টান্ত। তিনি ছাত্রদের যুগোপযোগী স্কিল ডেভেলপমেন্টের দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন— “যদি তোমরা যোগ্য হও, চাকরি তোমাদের পেছনে ছুটবে, তোমাদের চাকরির পেছনে দৌড়াতে হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “দাওয়াতের ময়দানে এখন অনেকেই অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে ইসলামকে ব্যবহার করছে, ইখলাসের সঙ্গে দাওয়াতদানকারী আলেমের সংখ্যা কম। তোমরা যোগ্য আলেম হয়ে নেতৃত্ব দাও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের, নয়তো একদিন এ বাতি নিভে যাবে। লেখালেখির দিকে মনোযোগ দাও, লেখনীর মাধ্যমে ইসলামি চিন্তা তুলে ধরো।”

অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথিকে সম্মাননা স্বরূপ উপহারস্বরূপ প্রদান করা হয় একটি চাদর ও মূল্যবান গ্রন্থ। এছাড়াও লেখক ও কলামিস্ট জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান ব্যক্তিগতভাবে উপহার দেন তাঁর লেখা বই “মদিনার ঝলক”।

সবশেষে প্রধান অতিথির দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। তাঁর হৃদয়গ্রাহী দোয়া ছিল প্রবাসে থাকা ছাত্রদের মানসিক প্রশান্তি, ইলমের অগ্রগতি ও ইসলামী ঐক্যের অটুট বন্ধনের জন্য।

এই ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রবাসে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মিক সংযোগ, ইসলামী মূল্যবোধ ও ঐক্যের ভিত্তি আরও মজবুত করে তোলে— যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে