মডেল পল্লবের কথা মনে আছে? ‘কী মিষ্টি মিষ্টি অপলক দৃষ্টি, অপরূপ সুন্দর লাগছে/ এই মনের গভীরে, যার ছবি আঁকা আছে, তুমি সেই সুন্দর চোখে ভাসছে’ -নব্বই দশকে প্রচারিত জনপ্রিয় এই বিজ্ঞাপন চিত্রের জিঙ্গেলের সঙ্গে কম-বেশি সবাই পরিচিত। এই বিজ্ঞাপন চিত্রের সেই সুদর্শন মডেলই পল্লব আর সঙ্গে ছিলেন রিয়া। এমন আরও অনেক বিজ্ঞাপন চিত্রে সে সময় পল্লবের ছিল উজ্জ্বল উপস্থিতি। ওই সময় টিভি পর্দায় যাকে বিভিন্ন প্রডাকশনের বিজ্ঞাপনের অভিনয়ে যাকে নিয়মিত দেখা যেত সেই সুদর্শন মডেল-অভিনেতা পল্লব দীর্ঘ ১১ বছর প্রেমের পর প্রেমিকা ওয়াহিদা রাহীকে বিয়ে করেছেন।
গত বছরের ১১ জুলাই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় তাদের। পারিবারিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানিকতা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পল্লব। এ বিষয়ে পল্লব বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি ও মার্চে একটি আনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ের খবরটি প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছিলাম। এখন খবরটি প্রকাশ্যে এলেও কোনো সমস্যা নেই। আমরা তো বিয়ে করেছি। সবাই আমাদের জন্য প্রার্থনা করবেন।’
পল্লবের স্ত্রী ওয়াহিদা রাহী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমরা অনেক ভালো আছি। আমাদের ১১ বছরের প্রেম। অনার্স ফার্স্ট ইয়ার থেকে প্রেম করতেছি, বিয়ে তো করলাম মাত্র।’
জানা গেছে, ২০১২ সালে পল্লব-রাহীর প্রথম পরিচয়। এরপর তারা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতেন। সেখান থেকেই প্রেম এরপর বিয়ে।
পল্লবের শুরুটা হয়েছিল আফজাল হোসেনের পরিচালনায় গার্লিক অয়েল পণ্যের বিজ্ঞাপন চিত্রে অভিনয় করে। ১৯৯১ সালে এই বিজ্ঞাপন চিত্রের শুটিংয়ে যখন তিনি অংশ নেন, তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায়। একে একে শতাধিক বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেন পল্লব। তার বিপরীতে মডেল হয়েছেন অপি করিম, তারিন, রিয়া, সুইটি, মৌ, তানিয়াসহ অনেক তারকা শিল্পী।
অভিনয়ে পল্লবের অভিষেক ঘটে ১৯৯৫ সালে। আরেফিন বাদলের ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ নাটকে অতিথি শিল্পী ছিলেন তিনি ও তানিয়া আহমেদ। এক যুগে কয়েকশ’ নাটকে অভিনয় করা হয়েছে তার। চলচ্চিত্রেও অভিষেক হয় পল্লবের। শাহীন সুমন পরিচালিত ‘বিয়ে বাড়ি’ নামে সেই চলচ্চিত্রে পল্লব ছাড়াও ছিলেন শাকিব খান ও রোমানা।
দেশের নাটক ও বিজ্ঞাপন চিত্রে তার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও সমসাময়িকদের মতো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি পল্লব। পরিচালক ও প্রযোজকদের মতে, পল্লব এগোতে পারেনি তার খামখেয়ালি স্বভাবের কারণে। আর প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নেন। পল্লবের ভাষায়, ‘আমি একটা সময় শিখে গেলাম, শোবিজে আবেগের মূল্য নেই। পুরোটাই মোহ। আমি কখনো মুখে এক আর অন্তরে আরেক- এ রকম নই। খোলা বইয়ের মতো ছিলাম। সমসাময়িক অনেক তারকা আমার বাসায় আড্ডা দিত। বাইরে গিয়েই আমার নামে আজেবাজে কথা ছড়াত। এসব হিপোক্রেসি দেখে হাসি পেত। কোনো দিন কেউ বলতে পারবে না, আমি কারও কোনো ক্ষতি করেছি।’
যাযাদি/ এস