কুসুম সিকদার, একাধারে ছোটপর্দা ও বড়পর্দায় অভিনয় করেন। ২০০২ সালে লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ২০১০ সালে ‘গহীনে শব্দ’ দিয়ে এ অভিনেত্রী চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘শঙ্খচিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তবে নানা কারণে তিনি অভিনয়ে নিয়মিত থাকেননি। দীর্ঘবিরতি শেষে ২০১৭ সালে ‘নেশা’ নামে মিউজিক ভিডিওর মধ্য দিয়ে গানে ফেরেন। এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনায় পড়েন তিনি। হালে ফের ‘শরতের জবা’ একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাটির পরিচালনা এবং প্রযোজনায়ও আছেন তিনি। এ নিয়ে কথা বলেছেন....
নতুন কাজকর্ম কেমন যাচ্ছে এখন? দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিলাম না। সেটা আপনারাও জানেন। কারণ অভিনয় করার মতো গল্প-চরিত্র পাচ্ছিলাম না। নাটকে যেমন, চলচ্চিত্রেও। ক্যারিয়ারের এ সময় এসে নিজেকে খামোখা পর্দায় দেখানোর ইচ্ছেও নেই। ভালো গল্প-চরিত্র ও নির্মাতা পেলেই অভিনয় করব। বর্তমানে নতুন দু’-একটা কাজ হাতে আছে এবং কিছু কাজের কথা চলছে।
এখন কি তবে ভালো নাটক হচ্ছে না?
ভালো নাটক হচ্ছে না এমন কথা আমি বলতে চাই না। তবে আহামরি ভালো যে হচ্ছে এটিও বলা যাবে না। এখন প্রায় নাটকের গল্পই কাছাকাছি ও গতানুগতিক। ভালো নাটকের সংখ্যা কম হওয়াতে আমার সমসাময়িক অনেক শিল্পী নিয়মিত কাজ করছেন না এটাও কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না। যে বিষয়টি বলতে চাই, আমি নিজেকে উপস্থাপন করার মতো নতুন কিছু পাচ্ছি না।দর্শক তো ভারতীয় চ্যানেলের নাটকগুলো বেশ দেখছে! আসলে দর্শকদের ধরে রাখার মতো যে রকম টেস্ট দরকার সেটা ভারতীয় নাটক, সিরিয়ালগুলোতে আছে। এ কারণেই দর্শক নিজের দেশের চ্যানেল না দেখে সেসব চ্যানেলের সিরিয়াল দেখছে।
অনেক নারীই ক্যামেরার পেছনে কাজ করছে এবং ভালোও করছে তাইতো আমিও ক্যামেরার পেছনে নিয়মিত হতে চাই। এমন একটা পরিকল্পনায় ছিলাম অনেকদিন থেকেই। এরই মধ্যে অনেকটা গোপনীয়তা বজায় রেখে একটা সিনেমার শুটিং শেষ করেছি। ডাবিংও শেষ। আপনারা সবাই জানেন অভিনয়ের পাশাপাশি আমি লেখালেখির সঙ্গেও জড়িত। ‘অজাগতিক ছায়া’ নামে আমার একটি প্রকাশিত গল্পের বই আছে। তাতে ‘শরতের জবা’ নামে একটি গল্প আছে। এক পর্যায়ে ওই গল্পটি অবলম্বনেই একই শিরোনামে সিনেমা বানাই। এটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনার পাশাপাশি প্রযোজনাও করছি। ইচ্ছে আছে এ বছরের শুরুতে মুক্তি দেওয়ার।
দীর্ঘদিন পর সিনেমায় ফিরে কেমন লাগছে? প্রায় পাঁচ বছর অভিনয়ের বাইরে থাকায় একটা স্নায়বিক দুর্বলতা তো কাজ করেছেই। একটা চাপ নিয়ে শুটিং করতে হয়েছে। সিনেমার পরিচালক ও অভিনেত্রী হওয়ায় ক্যামেরার সামনে ও পেছনে দু’দিক থেকেই চাপ সামলাতে হয়েছে আমাকে। আবার প্রযোজক হওয়ায় পুরো টিম সামলাতে হয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে।
আপনার নির্মিত সিনেমাটি সম্পর্কে যদি কিছু বলেন- আমার দাদাবাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে। সেখানেই ছবিটির শুটিং হয়েছে। পুরো শুটিংয়েই আমার সঙ্গে ছিলেন বাবা। শুটিং টিমের সবার দেখভাল করেছেন। তা ছাড়া গ্রামে বাবার স্কুল আছে। সেখানকার অনেক শিক্ষকের সহযোগিতায় শুটিং করতে পেরেছি। তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। আমার সঙ্গে চলচ্চিত্রটির সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন সুমন ধর। এখন পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এতে আমার বিপরীতে রয়েছেন ইয়াশ রোহান। আরও অভিনয় করেছেন জিতু আহসান, শহিদুল আলম সাচ্চু, নরেশ ভূঁইয়া, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, অশোক ব্যাপারীসহ অনেকে। ছবিতে একটি গান আছে। আলেয়া বেগমের গাওয়া গানটির কথা ও সুর করেছেন ইমন চৌধুরী এবং সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন সন্ধি।
নাটকে কি আর ফিরবেন না? ২০১৮ সালে সর্বশেষ হানিফ সংকেতের পরিচালনায় কোরবানির ঈদের একটি একক নাটকে অভিনয় করেছিলাম। এরপর ব্যক্তিগত কারণেই আর টিভি নাটকে অভিনয় করিনি। যদিও অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। এখনো প্রস্তাব পাচ্ছি। যদি মানসম্মত নাটক হয়ে কেন নয়?
যাযাদি/ এস