শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

কুতুবদিয়ার সৈকতে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা জেলিফিশ

কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  ১৭ মার্চ ২০২৪, ২০:৪৫
কুতুবদিয়ার সৈকতে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা জেলিফিশ

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার সমুদ্রসৈকতে কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য মৃত জেলিফিশ। সামুদ্রিক এ প্রাণীর আধিক্যের ফলে সাগরে জেলেরা জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করতে পারছেন না। জেলেদের জালে মাছের পরিবর্তে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলিফিশ আটকে পড়ে। তাই জেলেদের মৎস্য শিকারে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিবার (১৭ মার্চ) বিকেল পাঁচটার দিকে কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ সমুদ্র-সৈকতের বালিয়াডিতে অসংখ্য মৃত জেলিফিশ পড়ে আছে সৈকতে।

মৃত জেলিফিশ গুলো বক্স আকারে এক দেড় ফুটের সমান। এ জেলিফিশ সাগরের ক্ষতিকর সামুদ্রিক প্রজাতি। এটি মূলত গ্রীষ্মকালে খরা নোনা পানি থেকে সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের ভাষায় এটিকে "নুইন্ন্যা" বলে। সাগরে এ জেলিফিশ বৃদ্ধি পেলে মাছের আনাগোনাও কমে যায়। শুধু তাই নয়, মানুষের গায়ের চামড়া এবং জেলেদের জালেরও ক্ষতি হয়। ফলে, সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছে না সাগর বেষ্টিত দ্বীপের কুতুবদিয়ার বেশির ভাগ জেলেরা। তবে, বৃষ্টি হলে বা সাগরে মিষ্টি পানি বৃদ্ধি পেলে এটি দূর হতে পারে ধারণা করছেন স্থানীয় জেলেরা।

এবিষয়ে মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি মাহমুদ উল্লাহ বলেন, তারা মাছ না পেয়ে সাগর থেকে খালি হাতে ফিরেছে। খরা নোনা পানি থেকে সৃষ্টি জেলিফিশ বা নুইন্ন্যার বেশিভাগ দেখা যাচ্ছে। যার কারণে জালে এই জেলিফিশ দেখা মিলছে বেশি। এর কারণে মাছও পাচ্ছেন না বলে জানান এ মাঝি ।

প্রতি বছর এ সময়ে ক্ষতিকর সামুদ্রিক এ প্রজাতির উদ্ভব হয়। নিজেদের জাল নিরাপদে রাখতে সাগর থেকে জাল তুলে এনেছে বলে জানান তিনি।

পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক জাতীয় সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার আহবায়ক এম, শহীদুল ইসলাম বলেন, গভীর সাগরে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেলে কম লবণাক্ততার জায়গায় জেলেফিস উপকূলে চলে আসতেই আটকে পড়ে বালুতে। তখন মরে যায়। কাছিমের খাদ্য জেলিফিস সাগরের কাছিমের পরিমান কমে গেলে জেলিফিসের বিস্তৃতি ঘটে বেশী।

বিষাক্ত এ জেলিফিস সামুদ্রিক মাছের জম। সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা এসব জেলিফিসের সংস্পর্শে গেলে চুলকানিসহ নানা সমস্যা হতে পারে। উপকূলে সারি সারি জেলিফিসের মৃত্যু জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের একটি। তবে সমুদ্র সৈকতের বালিয়াডিতে মৃত্য জেলিফিস পড়ে থাকা সত্যি উদ্বেকজনক।

কুতুবদিয়া উপজেলার মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব বলেন, সাগরে বিষাক্ত ধরনের জেলিফিশের পরিমান বেড়ে গেছে। যা মানুষের শরীরের সংস্পর্শে আসলে এমন অস্বস্তি হতে পারে। এ জেলিফিশের প্রধান খাদ্য মাছ ও মাছের ডিম। মাছ ও ডিম খেয়ে ফেলার কারণে সাগরের মাছ কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক প্রাণী কচ্ছপ কমে যাওয়া ও সামুদ্রিক দূষনের ফলে বিশ্বজুড়ে সাগরে জেলিফিশের বিস্তার বাড়ছে। এটি কিভাবে দূর করতে হবে এবিষয়ে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে