শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মৌসুমি আমের ব্যবসায় সফল হৃদয়

তানিউল করিম জীম
  ১৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই সেইসব শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য থাকে কীভাবে নিজের খরচ নিজে চালানো যায়, কীভাবে পরিবারকে আর্থিকভাবে কিছুটা সহায়তা করা যায়। এ জন্য বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের আশপাশে শুরু করে টিউশনি। দুই একটি টিউশনিতে খুব সহজেই নিজের খরচ চালানো যায়। কিন্তু খুব কম শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করেন। কারণ ব্যবসা করতে প্রয়োজন হয় মূলধন, ধৈর্য এবং পরিশ্রম। যা সবার থাকে না। তাই ছাত্রাবস্থায় এই পথে তেমন কেউ আসতে চায় না। তবে পরিশ্রম এবং মেধার মাধ্যমে মৌসুমি ব্যবসায় সফলতার মুখ দেখেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় সরকার। তার বাসা রাজশাহী জেলার আড়ানী পৌরসভায়। হৃদয় বর্তমানে পরিবারকে সহযোগিতার পাশাপাশি নিজের খরচ নিজেই চালান। হৃদয়ের ব্যবসার সফলতার গল্প শুনেছেন তানিউল করিম জীম।

করোনার ছুটিতে বাসায় এলাম। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় টিউশনিও বন্ধ হয়ে যায়। বাসায় বসেই ছিলাম। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মাথায় এলো আমের ব্যবসা করব। কারণ রাজশাহীর আম খুব প্রসিদ্ধ সবার কাছে। আমাদের নিজ এলাকাতেও আমের উৎপাদন ভালো। তারপর অনলাইনে শুরু করি আমের ব্যবসা এভাবেই মৌসুমি আমের ব্যবসা শুরু হয় বলে জানান হৃদয়।

হৃদয় বলেন, আমি ফেসবুক চালাই আগে থেকেই তাই প্রথমেই শুরু করি ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রম্নপে পোস্ট করা। এরপর শুরু হয় আম ডেলিভারি। প্রতিদিন সকালে উঠে ১৫-২০টি ফেসবুক গ্রম্নপে পোস্ট করতাম। প্রথমদিকে পরিচিত কম ছিল তাই ফলাফল আসল মোটামুটি। পরবর্তী বছর আমের মৌসুমে আবার আমের ব্যবসা করি। এবার খুব ভালো সাড়া পাই। এরপর ২০২২ সালে শুরু করি মৌসুমি আমের শেষে বারমাসি কাটিমন আমের ব্যবসা। পরে ব্যবসাটাকে একটু বড় করতে বিভিন্ন চারার, আখের গুড় এবং খেজুরের গুড়ের ব্যবসা করি।

হৃদয় বলেন, আমি সবসময় একটি বিষয় গুরুত্ব দিয়েছি সেটি হলো ভেজালমুক্ত পণ্য সরবরাহ। কোনো ধরনের ফরমালিন ব্যবহার করিনি। আবার কোনো পণ্য কোনোভাবে নষ্ট হয়ে গেলে টাকা বা পণ্য ফেরত নিয়ে আবার দিয়েছি। এতে আমি আমার ক্রেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছি। ক্রেতাদের বিশ্বাস রক্ষা করায় এখন আমার কাছে থেকে পণ্য কেনার ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কুরিয়ারের মাধ্যমে সারা দেশেই আম সরবরাহ করে থাকি, যা ক্রেতাদের জন্যও সুবিধাজনক।

২০২৩ সালে আমি প্রায় দুই শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতা পেয়েছিলাম। যারা দেশে তাদের পরিবারের জন্য আম ক্রয় করেছে। এ ছাড়া ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই ও আপু। বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে এ বছর আমার ব্যবসার মোড় ঘুরে যায়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ টাকা লাভ করেছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে হৃদয় বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি এ ব্যবসাকে যতটুকু বড় করা যায় করব। ক্রেতার আগ্রহ আছে এমন আরও কিছু পণ্য সরবরাহ শুরু করব। পণ্যের গুণ ও মানকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবসা করব। আমার খুব ভালো লাগে যে আমি আমার পরিবারকে এখন অনেকটাই সাহায্য করতে পারি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে