কুয়াশার চাদর আব্দুস সালাম
শ্বেত কুয়াশার চাদর গায়ে
সওয়ার হয়ে হিমেল বায়ে
এল দেশে শীত
হালকা আঁধার চারিদিকে
দিনের আলো হয় যে ফিকে
শিশির শোনায় গীত।
কাঁপে পশু কাঁপে মানুষ
কখনও বা হারায় যে হুঁশ
শীত বসে যেই জেঁকে
দিনমনি মুখ ঢেকে রয়
ঠান্ডা হাওয়া ধীরে যে বয়
বাড়ে থেকে থেকে।
ডায়রিয়া হয় ঘরে ঘরে
নিউমোনিয়া সর্দি-জ্বরে
জীবন বিপর্যস্ত
খড়কুটোতে আগুন জ্বেলে
একটু রোদের দেখা পেলে
স্বস্তি তাতেই মস্ত।
বৃদ্ধ-নারী কিংবা শিশু
প্রায় শোনা যায় কিছু কিছু
যায় যে মারা শীতে
শীতার্তদের পাশে দাঁড়াই
সাহায্যের হাত আসুন বাড়াই
সুখের পরশ দিতে।
শীত শীত এই ভোরে
কাকলী আফরোজ
দেখতে পেলাম নতুন এক রূপ
শীত শীত এই ভোরে।
মেঘেরা সব কুয়াশা সেজে
জমে আছে দূরে দূরে
কাছে যেতে হিম চাদরে জরিয়ে
মেঘ বলে কানে কানে,
দেখো পৃথিবীতে নেমে এসেছি
শুধু এই মাটির টানে।
মেঘেরা কেন মাটিতে নামে
বলো আকাশ কোরে মস্নান?
ভেবে সূর্য মুখটা লুকায়
বুকে নিয়ে হাজার অভিমান!
মেঘ তুমি জানো মৃতু্য তোমার
এই মাটির কাছেই এলে,
জেনে শুনে তবু আকাশকে ছেড়ে
সেই মাটিকেই মন দিলে?
শীতের কষ্ট
ডা. খোন্দকার শাহিদুল হক
\হ
পৌষ ও মাঘে শীতের বাগে
ফুল ফোটে না অনুরাগে
হলুদপাতার ঝরাখামে বন্দি থাকে কুঁড়ি
পত্রবিহীন গাছের শাখে
পাখপাখালি চুপসে থাকে
রৌদ্রহারা সাত সকালে নেইকো উড়াউড়ি।
কার যেন ঐ শীতল শ্বাসে
শিশির জমে সবুজ ঘাসে
হিম কুয়াশায় জড়োসড়ো ঝাপসা থাকে দৃষ্টি
তাপ হারানো দিনের আলো
দুঃখে যে তার মুখটা কালো
বিড়ম্বনার শেষ থাকে না নামলে হঠাৎ বৃষ্টি।
বস্তিগুলো স্বস্তিহারা
শীতল হাওয়ায় কাঁপবে তারা
ভাঙা বেড়ার কুঁড়ে ঘরে জমলে রাতে কষ্ট
হাড়কাঁপানো শীতের থাবা
কত কঠোর যায় না ভাবা
শীতার্ত ঐ মানুষগুলোর জীবন যে হয় নষ্ট।
তাদের কথা একটু ভেবে
হাত বাড়িয়ে কেউ কি দেবে
হয়তো তাতে শীর্ণমুখে ঝরবে সুখের হাসি
থাকলে বুকে মানবতা
ঘুঁচবে সকল পঙ্কিলতা
বৈরী শীতেও ফুটবে বুকে পুষ্প রাশি রাশি।
কাঁপছে শীতে অনাথ
আজহারুল ইসলাম আল আজাদ
দেশজুড়ে কাঁপছে মানুষ,
কাঁপছে পাখি, কাঁপছে পশু,
রেল লাইনের ধারে শুয়ে
কাঁপছে শীতে অনাথ শিশু।
মাথার পরে খোলা আকাশ
উদাল গায়ে তারা গুনে,
পস্ন্যাটফর্ম সাধের বিছানা
কাঁপছে শীতে কপাল গুণে।
লেপ কাঁথা কম্বল গায়ে,
সুখিরা থাকে মহাসুখে,
একটি কম্বল পাবার লাগি
অনাথের বুকে আশা জাগে।
একটি কম্বল পাবার আশে
নেতার বাড়ি যায় ছুটে,
বড়রা সব পেয়ে গেল,
অনাথ বসে মাথা কুটে।
সারা দেশে কোটি কম্বল
দান করে অনেক নেতা,
পরিচয়হীন শিশুর কপালে
জুটেনি একটা ছেড়া কাঁথা।
অনাথেরা যে ফসলই হোক
ওরাও পৃথিবীতে একটি বংশ
অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা
চিকিৎসায় আছে ওদেরও অংশ।