কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্বাধীনতার মাসে প্রতিষ্ঠিত ১ মার্চ ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাবের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে। কর্মসূচিতে ছিল প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় শিশু-কিশোরদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় স্মৃতি সৌধ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। দুপুর ২টায় সর্বসাধারণের পড়ার জন্য উন্মুক্ত যায়যায়দিন পত্রিকা স্ট্যান্ড উদ্বোধন করা হয়। সর্বশেষ মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমানকে স্মরণীয় করে রাখতে ও তার সম্মানে ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনের নামকরণ করা হয়েছে 'শহীদ লুৎফর রহামান মিলনায়তন'। ফিতা কেটে এ মিলনায়তনের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জীবন্ত কিংবদন্তি, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, কুড়িগ্রামবাসীর গর্ব আব্দুল হাই সরকার, বীরপ্রতীক। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল হাই সরকার, বীরপ্রতীকের সহধর্মিণী গুলশান আরা বেগম, ফুলবাড়ী সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ইসমাইল হোসেন বাদল, রাজারহাট আদর্শ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক, যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরামের আহ্বায়ক চারণ কবি ও গীতিকার আজিজুল হাকিম মন্ডল, সদস্য সচিব কবি ও গল্পকার আব্দুল মান্নান আকন্দ, যুগ্ম সদস্য সচিব সাংবাদিক নাজমুল হাসান, সদস্য কবি ও লেখক আব্দুল মান্নান, হাসানুর রহমান, আবু নাস প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন আর্ট শিল্পী আলী আজগার, তফিকুল ইসলাম তপন, সিরাজুল ইসলাম সীমান্ত, ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা সাংবাদিক ইউসুফ আলী সংগ্রামী, প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সাংবাদিক ইউনুছ আলী আনন্দ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, কোষাধ্যক্ষ মাইদুল ইসলাম, সদস্য এ.এইচ.এম এরশাদসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

মিলনায়তনের নামকরণ উদ্বোধন শেষে ফুলবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী প্রথম শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, গুণীজন সম্মাননায় আলোচনা সভা বক্তৃতা করেন আব্দুল হাই সরকার, বীরপ্রতীক। তিনি বলেন, একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানকে স্মরণীয় রাখতে তার সম্মানে ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকরা তাদের মিলনায়তনের নামকরণের উদ্বোধন করায় তারা সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান করেছেন।

উলেস্নখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ স্বাধীনতাযুদ্ধ ঘোষণার দুই দিন পর ২৮ মার্চ পাকপাকিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে লালমনিরহাট জেলার নেছরিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। তিনি জীবদ্দশায় ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের গংগারহাট ক্যাম্পে ইপিআর পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় ফুলবাড়ীতে একদল পাকবাহিনী প্রবেশ করলে লুৎফর রহমান তাদের প্রতিহত করার জন্য প্রতিরোধ করেন। তাদের পরাস্ত করার জন্য পিছু নিলে একসময় লালমনিরহাট জেলার নেছরিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে লুৎফর রহমানের সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন লুৎফর রহমান। পরবর্তীতে তার সহযোদ্ধারা শহীদ লুৎফর রহমানের মরদেহ লালমনিরহাট থেকে এনে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় দাফন করেন।

উপদেষ্টা

শব্দ সচেতনতায় সোচ্চার হতে হবে

ফ্রেন্ডস ফোরাম, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম।