রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বৃদ্ধ স্বামীকে নিজের কাছে রাখতে আদালতে কড়া নাড়লেন অশীতিপর বৃদ্ধা

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

পারিবারিক বিবাদের জন্য পৈতৃক বাড়িতে থাকেন না ছেলে। বাবাকে নিয়ে তিনি থাকেন নিজের তৈরি বাড়িতে। মা থাকেন পুরনো বাড়িতে। অসুস্থ স্বামীকে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য আদালতের দরজায় কড়া নাড়লেন বৃদ্ধা। যে মামলা শুনে ৯২ বছরের বৃদ্ধ এবং ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে আবার একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিলেন ভারতের কেরালা হাইকোর্ট। আদালত বললেন, 'আমৃতু্য দম্পতির পাশে আছি আমরা।'

৯২ বছরের বৃদ্ধ ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। তার অশীতিপর স্ত্রীও অসুস্থ। জীবন সায়াহ্নে আর আলাদা থাকতে চান না স্ত্রী। আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন, ছেলের কাছ থেকে তার কাছে স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যদিও ছেলের দাবি, পৈতৃক বাড়িতে অনেক ঝামেলা। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ রয়েছে।

প্রতিবেশীরা তাদের ওপর যে কোনো সময় হামলা করতে পারেন। নিরাপত্তার কথা ভেবেই বাবাকে তিনি নিজের কাছে রেখেছেন। মাকেও আসতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে আসতে রাজি নন। অন্যদিকে, বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছেলের জন্য স্বামী তার কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছেন। তারা একসঙ্গে থাকতে চান।

দুই পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শোনার পর কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রনের বেঞ্চ নির্দেশে বলেন, অবিলম্বে পুরনো বাড়িতেই থাকবেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। ছেলে চাইলে সেখানে থাকতে পারেন। আবার মাঝেমধ্যে গিয়ে দেখাশোনাও করে আসতে পারেন। কিন্তু দম্পতিকে আলাদা আলাদা বাড়িতে রাখা যাবে না।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্মৃতিভ্রংশ হওয়া বৃদ্ধ তার স্ত্রীর সঙ্গে থাকলে খুশিতে থাকবেন। নিজেদের ভালো স্মৃতির কথা ভাগ করে নিতে পারবেন। কোনোভাবে ছেলে তার বাবা-মাকে এ ভাবে আলাদা করে রাখতে পারেন না।

অন্যদিকে, ছেলের দাবি, মা অসুস্থ। তিনি কীভাবে বাবার খেয়াল রাখবেন? তাই তিনি বাবাকে নিজের কাছে রেখেছেন। মা চাইলে তার কাছে এসে থাকতে পারেন। কিন্তু পুরনো বাড়িতে গেলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়বেন বাবা। সেখানে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক একেবারেই ভালো নয়। তার অভিযোগ, বোনের 'ইন্ধনে' মা আদালতে এমন আর্জি নিয়ে গিয়েছেন। যদিও শেষমেশ দম্পতিকে একসঙ্গে ওই পুরনো বাড়িতে থাকার কথাই বলেছেন আদালত।

বিচারপতি জানান, ওই দম্পতি কেমন থাকেন, প্রতি মাসে সে সম্পর্কে রিপোর্ট জমা করতে হবে কোর্টে। ছেলে যদি মনে করেন যে, প্রতিবেশীরা তাদের ওপর হামলা করতে পারেন, তিনি পুলিশি নিরাপত্তা চাইতে পারেন। কিন্তু দম্পতিকে আর আলাদা রাখা যাবে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১৯ নভেম্বর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে