শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দেবহাটায় ‘স্বাস্থ্যসেবা ও রেফারেল কার্ড’ পাচ্ছেন রোগীরা

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:২৮
ছবি-যাযাদি

বাংলাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় শুরু হয়েছে রোগীদের শারিরীক অসুস্থতা ও রোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত ডাটাবেইজ সম্বলিত ‘স্বাস্থ্যসেবা ও রেফারেল কার্ড’ বিতরণ কার্যক্রম। কার্ডে উল্লেখিত রোগ ও চিকিৎসার পূর্ববর্তী তথ্যের ওপর নির্ভর করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করে রোগীদের জীবন বাঁচানো, সাধারণ মানুষকে আরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকমূখী করে তোলা ও তৃনমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়াসহ নানা বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এ পাইলট প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সাংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-০৩ আসনের সাংসদ প্রফেসর ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি’র পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় চলতি বছরের শুরুতেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। পরবর্তীতে এ নিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে যুগোপযোগী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেবহাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে সর্বপ্রথম নওয়াপাড়া ইউনিয়নে রোগী স্বাস্থ্যসেবা ও রেফারেল কার্ড বিতরণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ওই ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডে পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ কার্ড বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আব্দুল লতিফ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সাহেব আলী।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, প্রথমে উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নে সব শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষকে এ রোগী স্বাস্থ্যসেবা ও রেফারেল কার্ডের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সখিপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকায় ওই ইউনিয়নটি বাদে পর্যায়ক্রমে আরও তিনটি ইউনিয়নে এ কার্যক্রম চালু করা হবে। প্রতিটি কার্ডে প্রত্যেক মানুষের রোগ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত ডাটাবেইজ হালনাগাদ থাকবে। বর্তমান সময়ে ছোটখাটো অসুখেও রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এই কার্ড পদ্ধতি চালুর পর জরুরি বিষয় ব্যতীত ছোটখাটো অসুস্থতা জনিত কারনে রোগীরা আগে নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকে যাবেন। রোগীর শারিরীক অবস্থা ও কার্ডে থাকা রোগীর অসুস্থতা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত ডাটাবেইজের ভিত্তিতে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে কাউকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করলে, তিনি হাসপাতালে গিয়ে তার কার্ড দেখিয়ে সহজেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আব্দুল লতিফ বলেন, রোগী স্বাস্থ্যসেবা ও রেফারেল কার্ড চালুর মাধ্যমে রোগীরা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকমূখী হবেন, তেমনি গুরুতর অসুখ ও জরুরি চিকিৎসা ছাড়া সাধারণ রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যাওয়ার প্রবণতাও অনেকাংশে কমবে। তাছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ডকৃত রোগীদের রোগ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য আগে থেকে তাদের কার্ডে উল্লেখ থাকায় দ্রুত ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে এবং অপ্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার ঝামেলা থেকেও রোগীদের মুক্তি মিলবে বলেও জানান তিনি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে