ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ ঠেকানোর জন্য নতুন এক সুরক্ষা ব্যবস্থা উদ্ভাবনের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এমন এক বৈপ্লবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, যার নাম গোল্ডেন ডোম। মঙ্গলবার (২০ মে) তিনি জানান, ২০২৯ সালের মধ্যে ১৭৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে এই বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এছাড়া মহাকাশ থেকেও ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে সক্ষম হবে এই সিস্টেম।
ঘোষণা অনুযায়ী, প্রকল্পটির জন্য প্রাথমিকভাবে ২৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে তার বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই—২০২৯ সালের মধ্যে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘একবার নির্মাণ শেষ হলে গোল্ডেন ডোম পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত বা মহাকাশ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রও প্রতিহত করতে পারবে। এটি আমাদের দেশকে বাঁচাতে অত্যন্ত জরুরি।‘
জানা গেছে, গোল্ডেন ডোম হবে একটি বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যুহ, যাতে থাকবে মহাকাশভিত্তিক সেন্সর ও ইন্টারসেপ্টর।
এই সিস্টেম হাইপারসনিক, ব্যালিস্টিক ও উন্নত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে ড্রোন এবং পারমাণবিক হামলার বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়বে।
এছাড়া প্রকল্পের দায়িত্বে থাকবেন মার্কিন স্পেস ফোর্সের জেনারেল মাইকেল গেটলাইন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডা এরইমধ্যে এতে অংশগ্রহণের আগ্রহ দেখিয়েছে। পেন্টাগনের প্রধান পিট হেগসেথ বলেন, ‘আমাদের মাতৃভূমিকে আকাশপথে সব ধরনের হুমকি থেকে রক্ষা করতেই এই উদ্যোগ।‘
বিশেষজ্ঞরা গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের সময়সীমা ও বাজেট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। প্রকল্পের ব্যয় ৩০ থেকে ১০০ বিলিয়নের মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বেছে নিয়েছেন ‘হাই ভার্সন’, যার সর্বমোট ব্যয় হবে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক কৌশল বিষয়ক গবেষণা সংস্থা সিএসআইএস-এর বিশ্লেষক টম কারাকো বলেন, ‘১৭৫ বিলিয়নের নতুন তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি সম্ভবত ১০ বছরের ব্যয়।‘
গোল্ডেন ডোম পরিকল্পনায় উদ্বিগ্ন প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো। চীন একে ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং মহাকাশ একটি সম্ভাব্য যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যাহত করে এবং অন্য দেশের নিরাপত্তা খর্ব করে যুক্তরাষ্ট্র নিজের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
রাশিয়ার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি মনে করে ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি রয়েছে, তবে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়বে—এটি তাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত।‘
সে সঙ্গে তিনি এটাও বলেন, ‘ঘটনার গতিপথ ভবিষ্যতে কৌশলগত স্থিতিশীলতা পুনঃস্থাপনে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করবে।‘