রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

ড্র দিয়ে শুরু শান্তদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ

ক্রীড়া ডেস্ক
  ২১ জুন ২০২৫, ২১:১১
ড্র দিয়ে শুরু শান্তদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
সংগৃহীত 

গল টেস্টের পঞ্চম দিনে নানা বাক বদল শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। শেষ দিনে বেরসিক বৃষ্টি এসে বদলে দিয়েছিল অনেক কিছুই। জয়-পরাজয়ের নতুন সম্ভাবনাও উঁকি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই দলকে।

গলে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্টে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ড্রয়ের সম্ভাবনাই ছিল প্রবল। শেষ দিনে অবশ্য বৃষ্টি এসে বদলে দিয়েছিল ম্যাচের চিত্র। জয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল দুই দলের সামনেই। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে শেষ বেলায় একটি জয় উপহার দিতে সেই তারণাটা একটু বেশিই ছিল লঙ্কানদের।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতে বসেছিল তারা। এরপর আর সেই সাহস করেনি স্বাগতিকরা। ধীরে ধীরে হেঁটেছে ড্রয়ের পথে। শেষ পর্যন্ত গল টেস্টের ফলাফলও হয়েছে সেটিই। ১২ বছর পর গলে কোনো টেস্ট ড্র হলো। ২০১৩ সালে আগের ঘটনাটিও ছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার।

২০২৫-২০২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নের এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। ড্র করেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসরের যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৪৮৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। ১০ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে শান্ত বাহিনী। ৬ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা। এতে লঙ্কানদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭ ওভারে ২৯৬ রানের। ৪ উইকেটে ৭২ রান তোলে লঙ্কানরা। এরপর ৫ ওভার বাকি থাকতেই ড্র মেনে নেয় দুই দল।

চা-বিরতির আগে দ্রুতই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। বাঁ-হাতি এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন ওপেনার লাহিরু উদারা। উইকেট ছেড়ে বের হয়ে আসলে স্টাম্প ভেঙে দেন লিটন। ভাঙে ৩৬ রানের জুটি। উদারা ফেরেন ১৩ বলে ৯ রান করে। পরের ওভারেই ছোবল মারেন নাঈম হাসান। পাথুম নিশাঙ্কাকে শান্তর ক্যাচ বানান তিনি। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা নিশাঙ্কা ফেরেন ২৫ বলে ২৪ রান করে।

এরপর অবশ্য বাংলাদেশ বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হয় আরেকটি উইকেট পেতে। ড্রয়ের জন্য উইকেটে সময় কাটাতে থাকেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস আর দিনেশ চান্দিমাল। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮১ বলে মাত্র ১৩ রান করেন তারা।

চা-বিরতির পরে ৪৫ বলে ৮ রান করা ম্যাথুসকে ফেরান তাউজুল। টাইগার স্পিনারের ঘূর্নিতে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেন শর্টে ফিল্ডিং করা শান্তর হাতে। চান্দিমালকেও আর বেশিক্ষণ থাকতে দেননি তাইজুল। ২ ওভার পরেই তাকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন। ফেরার আগে ৪৪ বলে ৬ রান করেন তিনি।

এরপর অবশ্য আর কোনো সুযোগ দেননি লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জায়া ডি সিলভা আর কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনের দৃঢ়তায় ড্রয়ের পথেই ছুটছিল তারা। দিনের খেলা ৫ ওভার বাকি থাকতেই ড্র মেনে নেয় দুই দল।

এর আগে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বাগড়া দেয় বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টি শুরু হওয়ার ঠিক আগের বলে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। ফেরার আগে ৪৯ রান করেন তিনি।

এরপর লম্বা সময় বন্ধ ছিল খেলা। এতে কমিয়ে আনা হয় ওভার। বৃষ্টি শেষে শান্তকে সঙ্গ দিতে নেমে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান লিটন দাস। ৫ বলে ৩ রান করেন তিনি। এরপর জাকের আলি ৭ বলে ২ রান করে একই পথ ধরেন।

পরে শান্তকে সঙ্গ দেন নাঈম হাসান। দুজন মিলে ৪৮ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়নে। এরপর শান্ত সেঞ্চুরি তুলে নিলে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে। নাঈম অপরাজিত ছিলেন ৭ রানে। আর শান্ত ১২৫ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৯৫

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৮৫

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৮৭ ওভারে ২৮৫/৬ ডিক্লে. (আগের দিন ১৭৭/৩) (শান্ত ১২৫*, মুশফিক ৪৯, লিটন ৩, জাকের ২, নাঈম ৭*; আসিথা ৮-০-৩১-০, জয়াসুরিয়া ২৯-৩-৯২-১, থারিন্ডু ২৯-১-১০২-১, মিলান ১২-৪-২৬-১, ধানাঞ্জায়া ৮-০-২৭-০, কামিন্দু মেন্ডিস ১-০-২-০)।

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস (লক্ষ্য ২৯৬): ৩২ ওভারে ৭২/৪ (নিসাঙ্কা ২৪, উদারা ৯, চান্ডিমাল ৬, ম্যাথিউস ৮, কামিন্দু ১২*, ধানাঞ্জায়া ১২*; হাসান ৩-০-১৯-০, তাইজুল ১৬-৩-২৩-৩, নাঈম ১৩-৪-২৯-১)।

ফল: ম্যাচ ড্র

সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে ০-০ সমতা।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে