শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২
‘বাংলাদেশি’ তকমা বৈষম্যমূলক ও অন্যায়!

কোন কোন এলাকায় বাঙালি হয়রানি জানিয়ে ওড়িশা সরকারকে চিঠি 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪৯
কোন কোন এলাকায় বাঙালি হয়রানি জানিয়ে ওড়িশা সরকারকে চিঠি 
সংগৃহীত

বাংলাদেশি’ সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করার ঘটনায় এ বার ওড়িশা সরকারকে চিঠি পাঠাল রাজ্য। বৃহস্পতিবার ওড়িশার মুখ্যসচিব মনোজ আহুজাকে চিঠি পাঠিয়ে ওই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। চিঠিতে পন্থ লিখেছেন, শুধুমাত্র নিজেদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার জন্য যে ভাবে তাঁদের অন্যায় ভাবে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা শুধু অন্যায় এবং বৈষম্যমূলকই নয়, মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকারেরও পরিপন্থী।

ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় কাজে যাওয়া রাজ্যের শ্রমিকের ক্রমাগত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে সে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানিয়েছেন পন্থ। চিঠিতে বাংলার মুখ্যসচিব লিখেছেন, হয়রানির শিকার হওয়া ওই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ রয়েছেন দিনমজুর, কেউ রিকশাচালক, কেউ আবার পরিচারকের কাজ করেন। কেউ কেউ আবার দীর্ঘদিন ধরে ওড়িশায় বাস করছেন। ওড়িশার কোথায় কোথায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তা-ও ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন পন্থ। রাজ্যের মুখ্যসচিব লিখেছেন, পারাদ্বীপের আশপাশের এলাকা, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপড়া, ভদ্রক, মালকানগিরি, বালেশ্বর এবং কটকের মতো উপকূলীয় জেলাগুলিতে কোনও আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের আটক করা হচ্ছে।

গত ২৫ জুন ওড়িশায় কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন শ্রমিককে আটক করে সে রাজ্যের পুলিশ। ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে তাঁদের আটক করার খবর প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। ওই শ্রমিকেরা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা। প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ ওই শ্রমিকদের আত্মীয়পরিজন তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারেননি। ওড়িশার রেমুনা থানার পুলিশ তাঁদের আটক করে। তাঁরা এখনও ছাড়া পাননি। নলহাটির ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিস্থিতির কথা মুখ্যসচিব পন্থের নজরেও আসে। তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার ওড়িশা সরকারকে পাঠানো চিঠিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়রানির শিকার হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পন্থ। তাঁদের কাছে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র, বিদ্যুতের বিল-সহ বিভিন্ন বৈধ নথিপত্র থাকার পরেও কেন তাঁরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রাজ্য সরকারের। শ্রমিকদের কাছে বেশ কয়েক প্রজন্ম আগের জমির নথি চাওয়াও এক অযৌক্তিক দাবি বলে মনে করছেন বাংলার মুখ্যসচিব। পশ্চিমবঙ্গের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিদের পরিচয় এবং নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার পরেও অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা হয়রানি থেকে মুক্ত হচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন পন্থ। এই ধরনের ঘটনা ভীষণ উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে