বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ নামে একটি আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। অনেক দিন ধরে আলোচনা ও খসড়া পরিবর্তনের পর আজ ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’–এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
এতে সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য বা কনটেন্ট, যেটি সহিংসতা উসকে দিতে পারে, সেটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে প্রস্তাবিত আইনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন বলেছিলাম সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করে যুগোপযোগী আইন করবো। আমরা বিভিন্ন সময়ে খসড়া করেছি। আমরা সবাই মিলে কনসাল্টেশন করেছি। ২৫ বার খসড়া পরিবর্তন করেছি। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর এই সপ্তাহে চূড়ান্ত গেজেট জারি হবে।
‘প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো নারী-শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানির জন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। নয়টি ধারায় কুখ্যাত মামলা হতো। এই ধারায় মামলাগুলো এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এ ছাড়া কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, মতামত বা কথা বলায় যে অপরাধ হতো সেখানে মাত্র দুটি বিষয় রাখা হয়েছে। একটি নারী ও শিশুর প্রতি যৌন নিপীড়নমূলক কনটেন্ট প্রকাশ বা হুমকি দেওয়া। আরেকটি হলো ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর মধ্য দিয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়। এই মামলা হলে আমলি আদালতে যাবে, তারপর তিনি যদি দেখেন কোনো ভিত্তি নেই তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা বাতিল করতে পারবেন।
তিনি বলেন, কথা বলা বা মতামত দেওয়ার জন্য যে মামলা হতো সেগুলো জামিনযোগ্য করা হয়েছে। কথা বলা বা মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের সাজা। মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে সাজার বিধান আরও বেশি আছে।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথবারের মতো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) মাধ্যমে কোনো সাইবার অপরাধ করা হয় সেটাকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কনটেন্ট এবং বঙ্গবন্ধু সংক্রান্ত ধারায় প্রচুর মামলা করা হতো, এই ধারা বাতিল করা হয়েছে। মানহানিকর মামলায় হতো সে ধারা বাতিল করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, যে নয়টি ধারা বাতিল করা হয়েছে সেই ধারায় করা মামলাগুলো গেজেট নোটিফিকেশনের আগের দিন পর্যন্ত যে মামলা তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ৯৫ শতাংশ মামলা আছে। সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে।