জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রতি দেশের অবিচল অঙ্গীকারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি, সহনশীলতা ও মানবতার চর্চায় বিশ্বাস করে বলেও মত দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) উদযাপিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের শান্তিরক্ষীরা তাদের পেশাগত উৎকর্ষতা, অসাধারণ সাহস, মানবতা, আত্মত্যাগ ও সততার মাধ্যমে বিশ্বে শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে।’
জাতিসঙ্ঘ সদরদফতরে দিবসটি উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- মহাসচিবের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ১৯৪৮ সাল থেকে প্রাণ হারানো ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। যাদের মধ্যে গত এক বছরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭ জন।
বাণীতে গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক প্রতীকী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের অভিজ্ঞ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সংঘাত প্রতিরোধ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।’
এ সময় ‘আন্তর্জাতিক জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান ড. ইউনূস। জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোয় যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মত দেন তিনি।
১৯৮৮ সালে প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষীরা বিভিন্ন সংঘাত কবলিত দেশে শান্তি বজায় রাখা এবং জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।’
তাদের দক্ষতা ও নিষ্ঠা সংঘাত-পীড়িত অঞ্চলের বেসামরিক জনগণের আস্থা অর্জন করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মর্যাদা আরো উচ্চে তুলে ধরেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।