রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

বিদেশী মিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ভারত, জাতীসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা উচিত

মো: মামুন রানা
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৬
বিদেশী মিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ভারত, জাতীসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা উচিত
ছবি : যায়যায়দিন

বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেলো ভারতে। বলছি আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন অফিসে হামলার কথা। সব সময় নেগেটিভ নিউজে এগিয়ে থাকে ভারত। তাদের দেশের মানুষ এখনো মাঠে, ঘাটে বা নদীর পাড়ে মল-মুত্র ত্যাগ করে, ন্যূনতম স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাই। কিন্তু তারা নিজেদের তথাকথিত সুপার পাওয়ার দাবী করে।

ভারতের ভুল পররাষ্ট্রনীতির কারণে দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলো থেকে লেজ গোটানোর পরে, বাংলাদেশ ছিল তাদের শেষ ভরসা। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী রেজিমকে ক্ষমতায় রাখার জন্য হেন কোন কাজ নাই, যা তারা করে নাই। কিন্তু এত কিছু করেও গন অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট বিদায় নেওয়ার পর, বাংলাদেশে তাদের আওতার বাহিরে চলে যায় এবং দক্ষিন এশিয়ায় তাদের দাদাগিরি শেষ হয়ে যায়।

এত কিছুর পরেও তাদের সম্ভাবনা ছিল সমঅধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার বা ডেভেলপ করার। কিন্তু তা না করে তারা এখন উলটো পথেই হাটছে।

সম্প্রতি আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন অফিসে ভারতে উগ্রবাদিদের হামলা, বিশ্বের বুকে একটি নজীরবিহীন এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

ভিয়েনা কনভেনশন-এর আইন অনুসারে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের অফিস বাংলাদেশের প্রপার্টি বা সম্পত্তি যা বাংলাদেশের অংশ হিসেবে বিবেচিত। সেই আগরতলা সহকারী হাইকমিশনে জংগি বা উগ্রবাদী হিন্দুদের হামলা মানে বাংলাদেশের উপরে হামলা যা ভিয়েনা কনভেনশন আইনের চরম লঙ্ঘন। ভারত সরকার তার দেশে বিদেশী দুতাবাস বা কুটনৈতিক মিশন এর নিরাপত্তা দিতে চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

ভারতকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে বর্তমান বাংলাদেশ কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার বাংলাদেশ না, এই বাংলাদেশ সম্পুর্ণ স্বাধীন এবং মেরুদণ্ডওয়ালা বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে এখনো বিপ্লবের স্পিরিট বজায় আছে। তাদের চারপাশে কঠিন এবং শক্তিশালী শত্রুদেশ রেখে, বাংলাদেশের সঙ্গে ঝামেলা বাধালে আখেরে মারাত্মক ক্ষতি তাদেরই হবে। আবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তব্য সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই তীব্র প্রতিবাদের ভাষা আসলেই তীব্র। এই ঘটনার রেশ শুধু তীব্র প্রতিবাদ এর মধ্যেই থাকবে না, প্রতিবাদ আন্তর্জাতিক ভাবেও করা হতে পারে।

ভারতের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ফুসে উঠছে বাংলাদেশের মানুষ। তারা বিভিন্নভাবে এর নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ভারতের অভ্যন্তরে বিদেশী দুতাবাস বা কুটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যার্থ হওয়ায়, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমান এবং শিখ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ ভারতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ করে, ভারতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা উচিত বলে সচেতন মহল মনে করে।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে