শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বাঁশখালীতে নৌকার পথের কাঁটা ‘স্বতন্ত্র', মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন চার হেভিওয়েট প্রার্থী

রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
  ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:০০
বাঁশখালীতে নৌকার পথের কাঁটা ‘স্বতন্ত্র', মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন চার হেভিওয়েট প্রার্থী

আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নৌকার বিপক্ষে মাঠে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে চাঁর হেভিওয়েট প্রার্থী। তাঁরা হলেন খোদ দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি, দক্ষিণ জেলা আ. লীগের প্রভাবশালী সদস্য আবদুল্লাহ কবির লিটন এবং অতীতের জোট শরিক জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ও জাসদের কামাল মোস্তফা চৌধুরী। এছাড়াও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন আরও ৩ প্রার্থী।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাঁশখালী আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল ও রাজনৈতিক অবহেলায় মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী গ্রুপ, সিআইপি মুজিবুর রহমান গ্রুপ ও আব্দুল্লাহ কবির লিটন গ্রুপ নামে ৩টি বলয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলে আসছিল। এই ৩ গ্রুপের আলাদা আলাদা শক্তি মাঠে প্রদর্শন ছিল মানুষের মুখে মুখে। এদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিগত দুইবারের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। অপরদিকে আ.লীগের দলীয় মনোনয়নে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন। অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠে আছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এবং জাসদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্টান্ডার্ড ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কামাল মোস্তফা চৌধুরী। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন শিল্পপতি আজিজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছৈয়দুল মোস্তাফা চৌধুরী রাজু এবং খালেকুজ্জামান। এরই মধ্যে খালেকুজ্জামান মনোনয়ন ফরম জমাও দিয়ে দিয়েছেন।

বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বলেন, ‘বাঁশখালীতে উন্নয়নের ধারাবাহিতায় নৌকা অবশ্যই জিতবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার অধিকার সবার আছে। এতে এই প্রভাব নৌকাতে পড়বে না।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান সিআইপি বলেন, বাঁশখালীতে আমরা নিজেদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মাদরাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের পরিবারের বিভিন্ন ধরণের ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত স্মার্ট গ্রুপে বর্তমানে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজারই বাঁশখালীর বাসিন্দা। আমরা ৭ ভাই বাঁশখালী জুড়ে বহুমুখী জনসেবার নিয়োজিত। তাই জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে ও প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুসারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি।'

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন বলেন, ’স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন আমার অবদান আছে কিনা বাঁশখালীবাসী ভালো জানেন। নয়তো আমার নাম জনগণের মুখে মুখে হতো না।'

এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারো নৌকা প্রতীক দিয়ে ধন্য করেছেন। আমি এমপি হয়ে বাঁশখালীতে বিগত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। উন্নয়ন দেখে জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবেন। যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম রক্ষার্থে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।'

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর ফরম কিনেছি। নির্বাচনী সব রকম প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে আছি। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে ইনশাল্লাহ সর্বোচ্চ ভোটে জয়যুক্ত হব।'

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় এবং নির্বাচনী মনোনয়ন ফরম দুইটিই নিয়েছি। নির্বাচন করার জন্য সকল প্রস্তুতি আছে। এই মুহুর্তে জোটবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়ে দৌড়ঝাঁপে আছি।'

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিস ও বাঁশখালী অফিস মিলে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছেন ৭ জন। জমা দিয়েছেন পাঁচ জন।'

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে