বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন।
একই সঙ্গে তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আরও প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করবেন বলে গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ্যে তারা জানিয়েছেন।
সংগঠনটির কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে তারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
রোববার (১৮ মে) রাত ৯টায় রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
পদত্যাগ করেছেন -মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সিয়াম আহসান আয়ান, সংগঠক আদনান সামির, মাহদী হাসান অনিক, রাতুল, এনায়েত রাব্বি, সদস্য আরাফাত সানি আপন, আল শামস সিয়াম, আল আমিন, সীমান্ত হোসেন, মোজাহিদ, আল তানজীল আহসান, জেলা কমিটির সদস্য মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ, জুনাইদ ইসলাম সাদিদ, সৃজন শাহ, মাহতাব হোসেন আবির, সাওম মাহমুদ সিরাজ।
এর আগে গত ১৫ মে নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন জেলা কমিটির আরেক সদস্য মাহমুদুর রহমান লিওন।
পদত্যাগ পত্রে তারা লিখেন, রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কিছু নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ।
এসবরে সাক্ষ্য প্রমাণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল চেতনা ও আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এই গুটিকয়েক নেতার অপকর্মের দায় তারা নিতে পারবেন না।
যারা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছেন তাদের ওপরও এই অপকর্মেও দায়বর্তায় যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অপমানজনক।
তাই এ সবের প্রতিবাদে তারা গদত্যাগ করলেন।
এ সময় মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সিয়াম আয়ান হাসান অভিযোগ করেন, পুরো বাংলাদেশের মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছিল কিন্ত আমরা সেই বিশ্বাস রাখতে পারিনি।
মহানগর ও জেলা কমিটির নেতারা টেন্ডার বাণিজ্য, জমির দালালী, মামলা বাণিজ্য ও মেলায় জুয়ার আসর থেকে চাঁদা আদায়, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ৩০ জনের নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জেলা মহানগর কমিটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে।
পদত্যাগকারী জেলা কমিটির সদস্য মাহতাব হোসেন আবির বলেন, দুই মাস আগে নগরীর ঘাঘট এলাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় হাউজি জুয়ার আসর বসানো হয়। সেখান থেকে জেলা ও মহানগর কমিটি নেতারা ১৪ লাখ টাকা চাঁদা নেন।
এছাড়া রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ৩০ জনকে নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।
এর আগে গতবছর বন্যার সময় বন্যার্তদের জন্য তোলা ত্রানের ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তোলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার।
মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে আমি জড়িত নই।
তারা যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ করে তাহলে প্রমাণ হাজির করুক। অবশ্যই কারো না কারো স্বার্থে আঘাত লেগেছে এজন্য এমনটা হতে পারে।
এটা নিয়ে সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করে লিখিত বক্তব্য জানানো হবে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর রাতে ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে আহ্বায়ক ও রহমত আলীকে সদস্য সচিব করে ১১২ সদস্যের মহানগর কমিটি এবং ইমরান আহমেদকে আহ্বায়ক ও ডা. আশফাক আহমেদ জামিলকে সদস্য সচিব করে ১৫৫ সদস্যেও জেলা কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।