আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ছাড়াই অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একইসাথে গতানুগতিক বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার করারও দাবি জানিয়েছে দলটি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম বাজেট। একইসাথে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি বড় নীতিনির্ধারণী উপলক্ষ। পতিত স্বৈরাচারী সরকার অর্থনীতিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে রেখে গেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ন্যায্য ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থা। জনগণের জীবনযাত্রার অগ্রাধিকার। এ কারণেই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক পরিকল্পনা। এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও গভীর তাৎপর্য বহন করে।
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা জানান। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
আমীর খসরু বলেন, দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নাই- আমরা আশা করেছিলাম অন্তবর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সাথে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে বাজেট ঘোষণা করবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। বাজেট ঘোষণাটা পুরোপুরি গতানুগতিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে কর আরোপের কোনো যুক্তি নেই। আগামীদিনে বিএনপি ক্ষমতা এলে শিক্ষার কর মওকুফ করা হবে।
তিনি বলেন, বাজেটে আমাদের আউট অব বক্স চিন্তা করতে হবে। গতানুগতিক বাজেট থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল।
বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, বাজেট অনুমোদনের জন্য প্রচলিত সাংবিধানিক পদ্ধতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। জবাবদিহিতা এবং বাংলাদেশে সংসদীয় তদারকি শক্তিশালী করার জন্য মৌলিক সাংবিধানিক ও পদ্ধতিগত সংস্কারও করা হবে। সংসদীয় কমিটিকে শক্তিশালী করা, স্বচ্ছতা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ, নির্বাচনপূর্ব কেয়ারটেকার সরকারের জনা পরিষ্কার নির্দেশিকাসহ বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদিকে মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে জনগণের আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলে জনগণের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই জনগণের জীবনযাত্রার মান বাজেটের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা বৈষম্যের জন্য আন্দোলন করেছি। বাজেজে উল্টো দিক দেখছি।
আমীর খসরু বলেন, আমরা ক্ষমতায় এলে আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করব। কোনো কিছু বাতিল প্রসঙ্গ আসবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হোসেন শ্যামল, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।