শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

কেপিপিএলের কারখানা বন্ধ পেয়েছে ডিএসই

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:০৫
কেপিপিএলের কারখানা বন্ধ পেয়েছে ডিএসই

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের (কেপিপিএল) পরিচালনা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্মকর্তারা কোম্পানিটির কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে কার্যক্রম বন্ধ দেখতে পান। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে ডিএসই।

সিকিউরিটিজ আইনানুসারে কারখানা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে সে তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও স্টক এক্সচেঞ্জকে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানায়নি কেপিপিএল। তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করছে ডিএসই। এর আগে এক্সচেঞ্জটির কর্মকর্তারা ফ্যামিলিটেক্স (বিডি), উসমানিয়া গøাস শিট ফ্যাক্টরি, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, দুলামিয়া কটন মিলস ও রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলসের কারখানা পরিদর্শনে গিয়েও বন্ধ পেয়েছেন।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কেপিপিএলের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ৯৯ পয়সা। সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৯৬ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৯৮ পয়সায়।

সর্বশেষ ছয় বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। সর্বশেষ বছরগুলোয় কোম্পানিটির ব্যবসার পরিধিও ছোট হয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ হিসাব বছর থেকে টানা লোকসানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছিল ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সমান্য আয়ের বিপরীতে কোম্পানিটিকে পরিচালক লোকসান গুনতে হয়েছে ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বিভিন্ন খরচ শেষে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। লোকসানের কারণে আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। একইভাবে পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটি আয় দেখিয়েছে শূন্য। এ সময়ে তাদের পরিচালন লোকসান গুনতে হয়েছে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে আয় আগের বছরের তুলনায় বাড়লেও কোম্পানিটির পরিচালন লোকসান গুনতে হয়েছে ৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।

২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটি পরিচালন মুনাফায় ফিরলেও বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান গুনতে হয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে তারা শেয়ারহোল্ডারদের দশমিক ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫২ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে পরিচালন লোকসান হয়েছে ৪০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ৪৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারেহাল্ডারদের কোন লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি।

সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় আরো কমার পাশাপাশি নিট লোকসানও কমেছে। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় হয়েছে মাত্র ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে পরিচালন লোকসান গুনতে হয়েছে ২০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ২২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লোকসানে থাকায় সর্বশেষ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি কোম্পানিটি।

খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে আসে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৭৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। পুঞ্জীভ‚ত লোকসান রয়েছে ৮৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, ১ দশমিক ১১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৫৯ দশমিক ১৩ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে