ভারতীয় তারকা পেসার মোহাম্মদ শামি ২০১৪ সালে প্রেম করে মডেল হাসিন জাহানকে বিয়ে করেছিলেন। চার বছরের মাথায় তাদের সংসারে ভাঙন ধরে। এরপর থেকেই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বিচ্ছেদের মামলা চলে।
আর সেই মামলায় স্ত্রী হাসিন ও একমাত্র মেয়ে আয়রাকে ১.৩ লাখ রুপি করে মাসে ভরণপোষণের আদেশ দেন আলিপুর জেলা আদালত। সেটি মানতে না পেরে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন হাসিন, অবশেষে সেই রায়ও এসেছে।
শামিকে সাবেক স্ত্রী হাসিন জাহান ও মেয়ের ভরণপোষণের জন্য মাসে ৪ লাখ রুপি বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬ লাখ টাকা, খোরপোশ দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগে জেলা ও সেশন কোর্টের রায় অনুযায়ী এই পরিমাণ ছিল ১.৩০ লাখ রুপি, যা এবার অনেকটাই বেড়েছে।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক মাধ্যমে শামির ভক্তরা তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, একজন ক্রিকেটারকে এভাবে এত বেশি পরিমাণ খোরপোষ দেওয়া চাপের। তবে আদালত পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, শামির আয় ও আর্থিক সামর্থ্য, মেয়ের ভবিষ্যৎ এবং বিচ্ছেদের আগ পর্যন্ত হাসিন জাহানের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, “স্বামীর আয় ও আর্থিক বিবরণে প্রমাণ হয়েছে যে, তিনি আরও বেশি অর্থ প্রদানে সক্ষম। পেটিশনার স্ত্রী এখনো অবিবাহিত এবং সন্তানসহ আলাদা থাকছেন।
ফলে তাকে এমন পরিমাণ ভরণপোষণ দিতে হবে, যা তাঁর জীবনমান বজায় রাখবে এবং ভবিষ্যৎ নিরাপদ করবে।” টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বিচারককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “অতিরিক্ত পরিমাণ ভরণপোষণ দেওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি খুব কম অর্থও গ্রহণযোগ্য নয়।”
রায় ঘোষণার পর হাসিন জাহান আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, “গত সাত বছর ধরে নিজের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে আমি প্রায় সবকিছু হারিয়েছি। মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি। এখন অন্তত সেই সুযোগটা তৈরি হলো, এজন্য আদালতের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
তবে শুরুতে হাসিন আদালতে আবেদন করেছিলেন ৭ লাখ রুপি নিজস্ব খোরপোশ ও মেয়ের জন্য ৩ লাখ রুপি দাবি করে মোট ১০ লাখ রুপি মাসিক আর্থিক সহায়তার।
২০১৪ সালে বিয়ে করার চার বছর পর, ২০১৮ সালের মার্চে জাদবপুর থানায় শামি ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হাসিন। অভিযোগে উল্লেখ ছিল, তিনি ‘চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার’ হয়েছেন।
পাশাপাশি মেয়ের প্রতি অবহেলা ও দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন, শামি যৌতুকের জন্য চাপ দিতেন এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এছাড়া, তিনি দাবি করেন, শামি তাদের পরিবারের কোনো খরচ আর বহন করছিলেন না।
এই মামলা এখনো চলমান। তবে হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায় কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে হাসিন জাহানের জন্য, যদিও শামির ভক্তদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।