আজকের যায়যায়দিন

ভারতের কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছেও নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে সল্টলেকে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিজিৎ। সেখানে প্রথমেই তিনি জানিয়ে দেন, আগামী ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেবেন তিনি। তবে কোন্‌ আসন থেকে তিনি লড়বেন, তা এদিন জানাননি অভিজিৎ। বলেছেন, দল তাকে যে আসন দেবে, সেই আসন থেকেই লড়বেন তিনি। তথ্যসূত্র : ডিডাবিস্নউ নিউজ

এদিন তিনি বলেছেন, 'যখনই ন্যায়বিচারের চেষ্টা করেছি, শাসক দল ও কালো কোট গায়ে পরা কিছু দালাল আমার প্রতি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তাদের জবাব দিতেই আমায় রাজনীতির ময়দানে নামতে হলো।'

কয়েকদিন আগেই পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন অভিজিৎ। মঙ্গলবার সকালে সল্টলেকের বাড়ি থেকে কলকাতা হাইকোর্টে যান বিচারপতি অভিজিৎ। সেখানে প্রধান বিচারপতির কক্ষে গিয়ে নিজের পদত্যাগপত্র দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানান, ডাকযোগে রাষ্ট্রপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছেও তিনি ইস্তফাপত্র দিয়েছেন।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন এই বিচারপতি। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার বিরূপ মন্তব্য করেছেন তিনি। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতও হয়েছে তার। সোমবার তিনি জানিয়েছিলেন, সব কাজ গুছিয়ে তবেই পদত্যাগ করছেন তিনি।

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন / দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ

মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোন্‌ রাজনৈতিক দলে তিনি যোগ দিচ্ছেন, তা তিনি জানাননি। তবে পদত্যাগপত্র দিয়েই নিজের রাজনীতি স্পষ্ট করেন অভিজিৎ। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, কেন অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে তিনি যোগ দিলেন না। অভিজিৎ জানিয়েছেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করার মতো একমাত্র সর্বভারতীয় দল বিজেপি। যারা এ রাজ্যেও কাজ করছে।' তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ-ছয়দিন আগে তিনি বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিজেপিও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

সিপিএম-এর বিষয়ে অভিজিতের বক্তব্য, তিনি ধর্মে বিশ্বাস করেন, তা-ই সিপিএমে যোগ দেওয়ার কথা ভাবেননি। আর কংগ্রেসকে তিনি একটি পারিবারিক দল বলে মনে করেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ বলে মনে করেন।

এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিজিৎ বলেন, 'তৃণমূল বারবার ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেছে। সে কারণেই, বিচারপতির কাজ ছেড়ে সরাসরি রাজনীতির ময়দানে নামতে হলো। এটা তৃণমূলের অনুপ্রেরণা বলা যেতে পারে।'

বিজেপিকে কি তিনি দুর্নীতিমুক্ত দল বলে মনে করেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ জানিয়েছেন, বিজেপি দুর্নীতিমুক্ত কি-না তিনি জানেন না। তবে বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন।

আগামী ৬ এবং ৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তার উপস্থিতিতেই ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেবেন অভিজিৎ। বিজেপি সূত্র এমনই জানিয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, সব ঠিক থাকলে তমলুক আসনে প্রার্থী হতে পারেন তিনি। তবে অভিজিৎ এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি।