শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত

যাযাদি ডেস্ক
  ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

সাম্প্রতিক জান্তা-বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাতের জেরে মিয়ানমারের যেসব নাগরিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এরই মধ্যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর থেকে শরণার্থীদের প্রথম ব্যাচটিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্সে' পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং। তিনি বলেছেন, 'মিয়ানমারের যেসব নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুক্রবার এই নাগরিকদের প্রথম ব্যাচটিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।' তথ্যসূত্র : এএফপি

বীরেন সিং আরও বলেন, 'ভারত ১৯৫১ সালের রিফিউজি কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এরপরও দীর্ঘদিন ধরে মানবিক বিবেচনায় দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিপদগ্রস্ত নাগরিকদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে আসছে ভারতের সরকার।' এই বার্তার পাশাপাশি 'এক্সে' একটি ভিডিও-ও পোস্ট করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভিডিওতে মিয়ানমারের নাগরিকদের একটি দলকে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। এই দলটির অধিকাংশ সদস্য নারী ও শিশু।

ভারতের মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের। মিয়ানমারের সঙ্গে এই চার ভারতীয় রাজ্যের সীমান্তের সম্মিলিত দৈর্ঘ্য এক হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার। নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের দিক থেকেও মিয়ানমারের জনগণ এবং এই ভারতের এই চার রাজ্যের জনগণ বেশ কাছাকাছি।

২০২১ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি অভু্যত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং অভু্যত্থানে নেতৃত্ব দেন। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনতা। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থিদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট 'পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স' (পিডিএফ)। জোটভুক্ত তিনটি গোষ্ঠী তা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এই সংঘাতের নেতৃত্বে রয়েছে। সংঘাতের আঁচ থেকে সীমান্তবর্তী চার রাজ্যকে মুক্ত রাখতে গত ফেব্রম্নয়ারিতে মিয়ানমারের শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার থেকে তার বাস্তবায়ন শুরু হলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে