বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

হামাসের সঙ্গে চুক্তির দাবিতে ইসরাইলে বিশাল বিক্ষোভ

জিম্মি মুক্তি
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে ইসরাইলি সরকারকে চুক্তি করা ও নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শনিবার ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা নিহত বন্দি ইলাদ কাৎজিরের ছবি সংবলিত পস্ন্যাকার্ড বহন করেন -আল-জাজিরা অনলাইন

গাজা থেকে ইসরাইলি জিম্মি ইলাদ কাৎজিরের মৃতদেহ উদ্ধারের পর রাজধানী তেল আবিবসহ ইসরাইলের বিভিন্ন নগরীতে শনিবার লাখো মানুষ হামাস ও ইসলামিক জিহাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করে আনার দাবিতে সড়কে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, বিক্ষোভকারীরা 'এখনই নির্বাচন' এবং 'ইলাদ, আমরা দুঃখিত' বলে স্স্নোগান দেন। পরে পুলিশ জোর করে তেল আবিবের বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গাজায় জিম্মিদের স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে এদিন সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরাও সড়কে নেমেছিল। তেল আবিবে একটি গাড়ি বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্যে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন। এটি দুর্ঘটনা ছিল নাকি ইচ্ছাকৃত ছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তথ্যসূত্র : বিবিসি

হামাসের হাতে এখনো প্রায় ১২৯ জন ইসরাইলি জিম্মি হয়ে আছেন বলে ধারণা করা হয়। তাদের মুক্ত করে আনতে ইসরাইল সরকারের একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার অক্ষমতায় বিক্ষোভকারীরা চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন।

শনিবার ভোরে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ জানায়, তারা গাজার দক্ষিণের খান ইউনিসে রাতভর অভিযান চালিয়ে ইসরাইলি জিম্মি কাৎজিরের মৃতদেহ উদ্ধার করে। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় যাকে তার মাসহ ধরে নিয়ে যায় গাজার ফিলিস্তিনিদের আরেকটি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক জিহাদ।

গত জানুয়ারিতে ইসলামিক জিহাদ কাৎজিরের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। যেখানে তাকে ইসরাইল সরকারকে গাজায় অভিযান বন্ধ করে তাকে এবং অন্য জিম্মিদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানাতে দেখা যায়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নোয়াম পেরি বলেন, 'জিম্মি হওয়ার পর ইলাদ কাৎজির নিজেকে তিন মাস বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। আজ তার এখানে আমাদের সঙ্গে থাকা উচিত ছিল। আজ সে এখানে আমাদের সঙ্গে থাকতে পারত।' বিক্ষোভ আয়োজনকারীরা জানান, ইসরাইলজুড়ে প্রায় অর্ধশত স্থানে জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। যে বিক্ষোভে এক লাখের মতো মানুষ অংশ নিয়েছে বলে দাবি দেশটির বিরোধীদলগুলোর।

কাৎজিরের বোন কারমিৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তার ভাইয়ের মৃতু্যর জন্য ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, যদি তারা নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হতো, তবে তার ভাই জীবিত ফেরত আসত। ফেসবুকে তিনি লেখেন, 'আমাদের নেতারা কাপুরুষ এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় চালিত, যে কারণে এই চুক্তি এখনো হয়নি। তিনি লেখেন, প্রধানমন্ত্রী, যুদ্ধ মন্ত্রিসভা এবং জোটের সদস্যরা- আয়নায় নিজেদের দেখুন এবং বলুন, আপনাদের হাতেও কি রক্তের দাগ লেগে নেই?'

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় ১২শ ইসরাইলিকে হত্যা করে হামাস ও ইসলামিক জিহাদ। ধরে নিয়ে যায় আরও ২৫৩ জনকে। যাদের মধ্যে গত নভেম্বরে ছয় দিনের যুদ্ধবিরতির সময় বন্দি বিনিময় চুক্তিতে ১০৯ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে কাৎজিরের মা হানাও ছিলেন।

সম্প্রতি ইসরাইলে সরকারবিরোধী এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বৃহৎ যেসব বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে, এটি তার একটি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহু জিম্মিদের মুক্ত করে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিকে রোববার, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক ছয় মাস পর নিষ্ঠুর এই যুদ্ধ বন্ধ করতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে মিসরের রাজধানী কায়রোতে বৈঠকের পরিকল্পনা করেছেন মধ্যস্থতাকারীরা। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই বৈঠকে মিসর, ইসরাইল ও হামাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানিও অংশ নেবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে