মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
অবস্থান কিছুটা নরম

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে অস্ত্র সমর্পণ করবে হামাস

যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
গাজায় আয়োজিত প্যারেডে হামাস যোদ্ধারা -ফাইল ছবি

ইসরাইল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের যেসব ভূমির দখল নিয়েছে, সেগুলো মিলে যদি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তবে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি আছে হামাস। অর্থাৎ একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি তাদের অস্ত্র সমর্পণ করবে। গাজার এই সশস্ত্র সংগঠনটির কয়েকজন কর্মকর্তা এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। তথ্যসূত্র : সিএনএন, ওয়াশিংটন পোস্ট

সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির কিছু কর্মকর্তার দেওয়া এই বার্তাটি হামাসের অবস্থান কিছুটা নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ গাজা ভূখন্ডের শাসন ক্ষমতায় থাকা এই দলটি দীর্ঘদিন ধরে ইহুদি রাষ্ট্র তথা ইসরাইলকে ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

হামাসের রাজনৈতিক বু্যরোর ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক সদস্য বাসেম নাইম বৃহস্পতিবার বলেছেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি নিজেদেরকে নিরস্ত্র করতে রাজি হবে। হামাসের সশস্ত্র শাখার কথা উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি যদি জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে আল-কাসামকে (ভবিষ্যৎ) জাতীয় সেনাবাহিনীতে একীভূত করা যেতে পারে।'

হামাস ঐতিহ্যগতভাবে একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। এই সমাধান নীতি অনুযায়ী, ইসরাইলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে। বরং এর পরিবর্তে হামাস এতদিন সব ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে কথা বলে এসেছে।

'প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ'র প্রেসিডেন্ট মোস্তফা বারঘৌতি বলেছেন, তিনি হামাসের অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তাব সম্পর্কে আগে থেকে অবগত নন। তবে তিনি বলেন, এটি সত্যি হলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি ১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রণের কথা উলেস্নখ করে বলেছেন, 'এটা এই অর্থে গুরুত্বপূর্ণ, ফিলিস্তিনিরা দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করছে। কারণ এখানে দখলদারিত্ব চলছে। যদি কোনো ধরনের দখলদারিত্ব সেখানে না থাকে, তবে তাদের প্রতিরোধ করারও দরকার নেই।'

১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে এখনো লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করেন। যদিও এসব এলাকায় ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অন্যদিকে, হামাসের একজন শীর্ষ রাজনৈতিক কর্মকর্তা 'অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস' (এপি)-কে বলেছেন, ইসলামিক এই গোষ্ঠীটি ইসরাইলের সঙ্গে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময়ের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে ইচ্ছুক এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তারা তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে এবং রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হতে ইচ্ছুক।

এ বিষয়ে 'জেরুজালেম ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিউরিটি'র প্রেসিডেন্ট এফরাইম আনবার বলেন, 'ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের তাদের পৈতৃক বাড়ি, যেখানে আজকের ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত, সেখানে ফিরে যাওয়ার দাবি খুবই অবাস্তব। সেখানে ইহুদিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং এর অর্থ হবে 'ইসরাইল রাষ্ট্রের ধ্বংস'। পশ্চিমা দেশগুলোর সামনে ভালো সাজতে হামাস এ প্রস্তাব দিয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে