আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই ইসরায়েলকে তেহরানে হামলার জবাব দেবে ইরান। ইরানের বিভিন্ন সূত্রের বরাতে এ খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম 'সিএনএন'। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান তার ভূখন্ডে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণের একটি 'সুনির্দিষ্ট এবং শোচনীয়' প্রতিক্রিয়া দেবে। সম্ভবত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এই হামলা হতে পারে। তথ্যসূত্র : সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল, ইরনা
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র আমেরিকা বলছে, ইরানের কোনো অবস্থাতেই নতুন করে হামলা চালানো উচিত হবে না। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জিন-পিয়েরে বলেন, 'ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলার জবাব ইরানের দেওয়া উচিত নয়।' তিনি বলেন, 'যদি তারা হামলা করে, আমরা আত্মরক্ষার জন্য ইসরায়েলকে সমর্থন করব; কিন্তু সেটা করা তাদের উচিত নয়।'
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, ইরান 'কী করতে পারে বা করতে পারে না' সে সম্পর্কে কোনো মূল্যায়ন তিনি করবেন না। তবে তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা বিশ্বাস করে 'তাদের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত নয়।' বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, 'আমি আমাদের দুই সরকারের মধ্যে বাস্তব বা কাল্পনিক যোগাযোগের বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছি না। তবে আমরা যেমনটা প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেছি এবং আমি আপনাকে বলতে পারি যে, ইরান এই বার্তাটি বেশ স্পষ্টভাবে জানে, তাদের এই সংঘাত বাড়ানো উচিত নয়।'
এদিকে, ইসরায়েল তেহরানকে আগেই সতর্ক করে বলেছে, আর কোনো হামলা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল ইরান। হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুলস্নাহ প্রধান হাসান নাসরুলস্নাহ এবং ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নিলফরৌশনের হত্যাকান্ডের জবাবে ইসরায়েলে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছিল তেহরান। তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ভূপাতিত করার দাবি করে ইসরায়েল। ইসরায়েলর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরান 'বড় ভুল করেছে' এবং 'এর মাশুল দিতে হবে'।
এরপর গত ২৬ অক্টোবর ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের তিনটি প্রদেশের কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তৈরির স্থাপনায় তিন দফায় এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের হামলায় চার সেনা নিহত এবং 'সীমিত ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে দাবি করে ইরান।
ইরাকের আকাশে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের মহড়া
ইরানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার আগে ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষক, বিশেষ করে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের যুদ্ধবিমানগুলো গত ২৫ দিন ধরে ইরাকের আকাশসীমায় মহড়া দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের একজন সিনিয়র সেনা কমান্ডার। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর উপ-সমন্বয়ক ও সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুলস্নাহ সাইয়্যারি বুধবার দক্ষিণাঞ্চলীয় ফার্স প্রদেশের একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া এক বক্তব্যে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান।
রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুলস্নাহ বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েল, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও পারস্য উপসাগরীয় আরও কয়েকটি দেশের যুদ্ধবিমানের জন্য ইরাকের আকাশসীমা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এসব দেশের শত শত যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও ট্যাংকার বিমান ২৫ দিন ধরে ইরানে হামলা চালানোর মহড়া দেয়।