বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

তাপমাত্রা শূন্যের নিচে, তবু সাঁতারেই আনন্দ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
তাপমাত্রা শূন্যের নিচে, তবু সাঁতারেই আনন্দ
বরফশীতল পানিতে নামছেন এক সাঁতারু

সুস্থতার জন্য সাঁতার অসাধারণ একটা ব্যায়াম। তবে চীনের হারবিন শহরের মানুষ এটিকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। সেখানে নিয়মিত একদম মানুষ রীতিমতো বরফ কেটে পুকুর বানিয়ে তারপর হাড় জমিয়ে দেওয়া পানিতে ডুব দেয়। এটি তাদের প্রায় নৈমিত্তিক 'সাধনা'। মার্কিন বার্তাসংস্থা এপির একটি প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে। শূন্যের নিচে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানিতে নামার আগেই ঠান্ডায় হাত পা অবশ হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন অনেকে। তারপরও সারাবছর এই চর্চা চালিয়ে যান তারা।

তেমনই একজন হলেন শেন জিয়া, যিনি প্রায় দু দশক ধরে এই চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি মূলত হারবিনের প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণের ঝেইজিয়াং অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। শীতকালে তার নিজ এলাকার পানি যথেষ্ট ঠান্ডা থাকে না বলে অনুশীলন চালিয়ে যেতে এখানে আসেন তিনি। বলে রাখা ভালো, শীতকালে শেন জিয়ার শহরে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির একটু ওপরে থাকে! পানিতে ডুব দিয়ে এসে এপির প্রতিবেদককে তিনি বলেন, এই চর্চা তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। যদিও পানিতে নামলে সারাদেহে সুঁই ফোটার অনুভূতি হয়, তবুও তার মন একরকম প্রশান্তি আর কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ হয়ে যায়। হারবিনে শীতকালে বরফ কেটে পানিতে নামার প্রচলন ১৯৭০ এর দশকে শুরু হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা উ জিয়াওফেং। রুশ সীমান্তবর্তী শহরটি অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের ব্যাপটিজম প্রক্রিয়া দেখে অনুপ্রাণিত হয়। প্রচন্ড অনুগত রুশ অর্থোডক্সরা বরফ শীতল পানিতে নেমে তাদের ব্যাপটিজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। সেই অনুপ্রেরণায় ১৯৮৩ সালে হারবিনের 'উইন্টার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠিত হয়। জিয়াওফেং আরও বলেছেন, হারবিনকে শীতকালীন সাঁতারের তীর্থ বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া, শীতকালীন উৎসবের জন্যও শহরটি জনপ্রিয়, যেখানে বরফের বিভিন্ন রকম ছোট বড় ভাস্কর্য প্রদর্শন করা হয়।

প্রায় তিন দশক ধরে অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া ৬১ বছর বয়সি জিয়াওফেং সাঁতারের মাধ্যমে ভিন্ন রকমের এক বন্ধন ও আনন্দ অনুভব করেন। শীতকালীন সাঁতারুরা অন্যদের চেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় বলে জিয়াংফেং জানিয়েছেন, কোভিড লকডাউনের সময় তাদের প্রচারণা ছিল, হাসপাতালের লাইনে নয়, বরং সাঁতারের জন্য লাইনে দাঁড়ান। বরফ শীতল পানিতে নিয়মিত দাপিয়ে বেড়ানো আরেক ব্যক্তি হলেন ৭৬ বছর বয়সী ইউ ডেক্যাং। তার দাবি, সাঁতার তাকে এতটাই সুস্থ রেখেছে যে, কোনওদিন সর্দিও ভোগেননি তিনি। তিনি বলেন, শীতকালে মাত্র একদিন সাঁতার না কাটলেও খুব অস্বস্তি লাগে!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে