সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফলের বাজারে সিন্ডিকেট

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
নতুনধারা
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি দাম বৃদ্ধিসহ ভোগান্তির পেছনে সিন্ডিকেটের কারসাজির অভিযোগও বিদ্যমান। এরই মধ্যে আলোচনায় আসছে, ফলের বাজারেও সিন্ডিকেটের বিষয়টি। যা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দাম বৃদ্ধি কিংবা ভোগান্তিসহ কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কাম্য হতে পারে না।

বর্তমানে ডলার সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে ফল ও খেজুরের দাম এমনিতেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এর মধ্যে এক শ্রেণির আমদানিকারক, কমিশন এজেন্টরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার জটিলতা এবং পরিবহণ ব্যয় গত বছরের তুলনায় বেশি। কিন্তু অনেক আমদানিকারক উচ্চমূল্যের খেজুর শুল্ক ফাঁকি দিতে কম দাম দেখিয়ে আমদানি করেছে বলেও জানা যাচ্ছে। বাজারে বিক্রি করছে চার থেকে পাঁচগুণ দামে। এটাও আলোচনায় এসেছে যে, গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর হাতে ক্রেতারা জিম্মি। প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এ পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং কোনো সিন্ডিকেট কিংবা গোষ্ঠী অথবা কেউ যেন ক্রেতাদের জিম্মি করতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

তথ্য মতে- গত অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ডলার সংকটে খেজুরের এলসি খোলা আগে কমলেও এখন বাড়ছে। এছাড়া সার্বিকভাবে ফলের এলসি খোলা বেড়েছে ২৯ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে আগে এলসি খোলা কমায় এখন আমদানি কমেছে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রোজা উপলক্ষে এবার ফল ও খেজুরের পর্যাপ্ত এলসি খোলা হয়েছে। সেসব পণ্য দেশে আসতেও শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জানা যাচ্ছে, রমজানের কাছাকাছি সময়ে বর্ধিত শুল্ক কমানো হলেও তখন এলসি করতে হলে বেশি দামে কিনতে হবে। আবার সময় স্বল্পতার কারণে তখন খেজুর ভোক্তাদের হাতে পৌঁছানো কঠিন হবে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা। আর এই নদীকে কেন্দ্র করে গত ৮৯ বছর ধরে গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি ফলের সবচেয়ে বড় বাজার বাদামতলী। ফলে এখান থেকেই পণ্য কিনে সরবরাহ করা হয় সারাদেশে। তথ্য মতে, অভ্যন্তরীণ এবং আমদানি করা ফলের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবসাই ব্যস্ততম এই পাইকারি বাজারকেন্দ্রিক। দিনে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার ফল বেচাকেনার এই বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। যেখানে, তারা নিজেদের মনমতো ফলের দাম নির্ধারণ, ফলের কার্টনে ওজন কম দেওয়া, সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ নানাভাবে ফায়দা লুটছেন বলে জানা যাচ্ছে। দেশের বৃহৎ এই ফলের বাজারকে এভাবে অস্থিতিশীল করে রাখায় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলেও প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে