সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোর গ্যাংয়ের ২৮ সদস্য গ্রেপ্তার

নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কিশোর গ্যাং। সারা দেশেই তারা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরী ও ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছয় কিশোর গ্যাং গ্রম্নপের প্রধানসহ ২৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব। বুধবার রাতভর অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ফেনী পৌরসভার মধ্যম রামপুর এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং গ্রম্নপ 'এসডিকে' গ্রম্নপের প্রধান রাব্বি (২০), তৌহিদুল সাগর (১৭), ফখরুলকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা থেকে 'নুরু গ্রম্নপের' সদস্য মো. রাকিব উদ্দিন তামিম (১৯), আহাদ আলীফ (১৯), গোপাল ত্রিপুরা (২২), আবরার হান্নান (১৯), মোহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (২০), সুব্রত বড়ুয়াসহ (২১) মোট ছয়জনকে ধরা হয়। একই থানাধীন আমিন কলোনি এলাকা থেকে রশিদ গ্রম্নপের প্রধান হারুনুর রশিদকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়।

এটা সত্য সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধ কর্মকান্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাকান্ডের মতো বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা। গত এক বছরে অসংখ্য কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রম্নপের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়।

কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। খোদ রাজধানী ঢাকাতেই প্রায় ৮০টি গ্যাং রয়েছে। এরা নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম। গ্রেপ্তাররা ভাগ হয়ে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ করত। এর আগে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব গ্রম্নপের সদস্য চুরি-ছিনতাই ও ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত। তাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করছেন। এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য দিনে-দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল টান দিয়ে নিয়ে যায়। তারা উঠতি বয়সি মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পৃথক দলে ভাগ হয়ে ছিনতাই করত। দীর্ঘদিন ধরে কিছু বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে তারা এই কাজ করত। বিশেষ করে রাতের বেলা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। তারা ছিনতাইয়ের জন্য লেগুনা ব্যবহার করে। লেগুনা চালক ও হেলপারও তাদের সঙ্গে জড়িত।

এর আগেও বিভিন্ন সময়- কিশোর গ্যাং কতটা ভয়াবহ এ সংক্রান্ত উদ্বেগ উঠে এসেছে। ফলে এবারের ঘটনা আমলে নিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার- কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত ও বিশ্লেষণপূর্বক উদ্যোগ গ্রহণ করা। এ ছাড়া মনে রাখা দরকার, শিশু-কিশোররা যদি বিপথে চলে যায়, নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তবে তা পুরো দেশ ও জাতির জন্য উদ্বেগের হয়ে দেখা দেবে- সঙ্গত কারণেই এ বিষয়গুলো সহজভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।

কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগ দরকার। রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও এগিয়ে আসতে হবে।

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধমূলক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে