অর্থ পাচারের ঘটনা একটি বড় ধরনের অপরাধ। এজন্য শাস্তির বিধান আছে, অর্থ পাচার বন্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। তদুপরি বারবার অর্থ পাচারের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। ফলে, অর্থ পাচারের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না কেন, এ প্রশ্নকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, দেশে বর্তমানে ডলার সংকটের মূল কারণ টাকা পাচার বলে মন্তব্য করে সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও কৃষিবিদ শামসুল আলম বলেছেন, বছরে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বা ৮১-৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু। তাই জরুরি ভিত্তিতে এটি রোধ করার পদক্ষেপ দরকার বলেও মন্তব্য করেন। মূলত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে 'বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি : প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
আমরা বলতে চাই, যে কোনো কারণেই হোক অর্থ পাচারের মতো ঘটনাকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। বরং অর্থ পাচার সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া প্রতিমন্ত্রী ও কৃষিবিদ বলেছেন, বছরে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বা ৮১-৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়- এটিও এড়ানো যাবে না। বরং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। উলেস্নখ্য, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ঋণের ২২ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্যাংকের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর রাশ টানতে হবেই। ব্যাংক কমিশন করলে ভালো, না হলে অন্তত শক্তিশালী একটা কমিটি করা উচিত বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে, এমন মতও উঠে এসেছে। ফলে এই বিষয়গুলোও আমলে নিতে হবে।
আমরা বলতে চাই, অর্থ পাচারের যে কোনো কৌশল বা কারণ সংক্রান্ত বিষয়াদি বিবেচনা করে উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যদিকে, অর্থ পাচারের মতো অপরাধ কেন রোধ হচ্ছে না, সেটিও এড়ানো যাবে না। কেননা, বিভিন্ন সময়েই অর্থ পাচার সংক্রান্ত খবর সামনে আসে। এর আগেও নানা সময়ে অর্থ পাচার সংক্রান্ত উদ্বেগ উঠে এসেছে। ফলে, অর্থ পাচার বন্ধ করতে সব ধরনের পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের এটা মনে রাখা দরকার, এর আগে এমন বিষয়ও পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছিল, আইনগতভাবে দেশের বাইরে টাকা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও অনেকে মালয়েশিয়া, ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাড়ি-ফ্ল্যাট ক্রয় ছাড়াও নানা ব্যবসা-বাণিজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়া বহুল আলোচিত পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সেও অনেক বাংলাদেশির নাম এসেছিল। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক চিত্র আমলে নেওয়া জরুরি।
আমরা বলতে চাই, দেশে বর্তমানে ডলার সংকটের মূল কারণ টাকা পাচার বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও কৃষিবিদ শামসুল আলম। এটি এড়ানো যাবে না। বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একইসঙ্গে মনে রাখা দরকার, এর আগেও নানা সময়ে এটা আলোচনায় এসছে যে, অর্থ পাচারের একটি বড় কারণ হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থ পাচারের হারও দিন দিন বাড়ছে বলেও জানা যায়। সঙ্গত কারণেই, প্রয়োজনে আরো বেশি কঠোর হতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, অর্থ পাচারকারীরা যাতে কোনোভাবে পার না পায়, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সেটি নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। তা না হলে নানা প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচারের ঘটনা বাড়তে থাকবে এমন আশঙ্কা থাকে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।