বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, পরিবেশ ও বন অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা কোনো প্রকার দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবহেলা প্রদর্শন করলে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশের বনকে বনের মতো রাখতে হবে এবং দেশের পরিবেশের মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে। বুধবার প্রথমবারের মতো বন অধিদপ্তর পরিদর্শন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

দেশে আইনের শাসনের ঘাটতি আছেই বলে দুর্নীতিবাজদের কিছু হয় না বলে মন্তব্য করেছিলেন অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেছিলেন, দেশে দুর্নীতি দমন করতে চাইলে বড় দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত দেখাতে হবে।

1

মনে রাখতে হবে, নৈতিকতা-বহির্ভূত সব কাজই দুর্নীতি। ক্ষমতার অপব্যবহার করলে সেটাকে দুর্নীতি বলা যায়। কাজেই দুর্নীতি রাজনীতিতে থাকতে পারে, প্রশাসনে থাকতে পারে, প্রতিষ্ঠানে থাকতে পারে। অর্থাৎ সর্বত্রই থাকতে পারে দুর্নীতি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয় আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ওভার ইনভয়েস ও আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বাজেটের ক্ষেত্রে কাজের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি পূরণ না হলেও বাজেটের টাকা সবটুকুই খরচ হয়ে যায়। এর ফলে, বাজেট বাস্তবায়নেও অনেক দুর্নীতি করা হয়। আরেক ধরনের দুর্নীতি হয় আত্মীয়তার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ কোনো কর্মকর্তার আত্মীয়কে কাজ পাইয়ে দেওয়া বা তার লাভের দিকে খেয়াল রাখাও দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার কাজ যারা করবে তাদের অবশ্যই নৈতিকতা ঠিক থাকতে হবে। আর এই নৈতিকতা ঠিক না থাকাও এক ধরনের দুর্নীতি। বাংলাদেশে এই নৈতিকতাপূর্ণ লোক পাওয়া খুবই কষ্টকর। পাশাপাশি বাংলাদেশে দুষ্টচক্র বা সিন্ডিকেট বাজার থেকে শুরু করে ব্যাংকসহ সব প্রতিষ্ঠানে আছে। এই দুষ্টচক্র কিন্তু একা কাজ করে না, তারা যোগসাজশে কাজ করে। বাংলাদেশকে যদি দুর্নীতিমুক্ত করতে হয় তাহলে এই দুষ্টচক্রকে বিতাড়িত করতে হবে। যারা আমাদের সমাজে দুর্নীতি করে তাদের আমাদের বয়কট করা উচিত।

দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারছে না। বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতির জন্য পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতির সেই কলঙ্ক-তিলক মোচন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এটা যেমন সত্য, একইভাবে সত্য যে, আমরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করতে হবে দেশের সবাইকে।

আমরা মনে করি, দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশালী ও গর্বিত দেশ। দুর্নীতি নির্মূল করতে না পারা এটা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর পদক্ষেপ জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে