বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

  ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

আবারও এক অসাধারণ মুহূর্ত! কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালি দর্শকদের নিস্তব্ধতার সাগরে ডুবিয়ে দিল ঋতুপর্ণা চাকমার শেষ সময়ের গোল। এরপর শুধুই লাল-সবুজের উৎসব। টানা দ্বিতীয়বার সাফ গেমসের শিরোপা জিতে নেচে-গেয়ে উদযাপনে মেতে ওঠে সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা, তহুরা খাতুনরা। কেননা, নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ! এক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, গত আসরে ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলার মেয়েরা। এবারের সাফে ফের নেপালকে পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফাইনালে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। আমরা মনে করি, এটি যেমন আনন্দের তেমনি আশাব্যঞ্জক। দেশের ফুটবলের অগ্রতিতে এই বিজয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই প্রতীয়মান হয়। এই শিরোপা জয়ে আমরা জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। একইসঙ্গে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটিও কাম্য।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে একাধিক সুযোগ নষ্ট করার গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় দু'দল। বিরতি থেকে ফিরে মনিকার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর দ্রম্নতই স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান আমিশা কার্কি। তবে ঋতুপর্ণা চাকমার অসাধারণ এক গোলে ফের এগিয়ে গেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তথ্য মতে, ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের ভালো সুযোগ পায় বাংলাদেশ। নেপালের ডিফেন্ডারের ভুলে তহুরার শট ফিরে আসে সাইড পোস্টে লেগে। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে দু'দল। ম্যাচের ১০ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় নেপাল। ডি বক্সের বাইরে থেকে আমিশা কার্কির নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। বেঁচে যায় বাংলাদেশ। এরপর দুই দলই চেষ্টা করে মিডফিল্ড দখলে নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার। তবে, ভুল পাসের কারণে বল হারায় দু'দল। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ডান পাশে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। তবে মারিয়া মান্দার নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে।

মূলত বিরতি থেকে ফিরে ৫২ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দারুণ এক আক্রমণে নেপালের রক্ষণবুহ্য ভেদ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মনিকা চাকমা। তবে এর ৩ মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফিরে নেপাল। বাংলাদেশের ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান আমিশা। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক শট নেন মারিয়া মান্দা। তবে দুর্দান্ত দক্ষতায় একহাতে দারুণ সেভ করেন নেপালের গোলরক্ষক আঞ্জিলা। সেখান থেকে পাওয়া কর্নারও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের ৮১ মিনিটে আবারও গোলের দেখা পায় বাংলার মেয়েরা। বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক শটে নেপালি গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান ঋতুপর্ণা চাকমা। যদিও গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে নেপাল। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ২-১ গোলের জয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে বাংলাদেশের মেয়েরা। আর এই নিয়ে সাফে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো সাবিনা খাতুনের দল।

আমরা বলতে চাই, বিজয় প্রেরণার শক্তি দেয়, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। ফলে, এই জয়কে সামনে রেখে আরও সুন্দর আগামী তৈরিতে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। লক্ষণীয়, ২-১ গোলের জয়ে শিরোপা উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আর এই নিয়ে সাফে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো সাবিনা খাতুনের দল- যা অত্যন্ত সুখকর এবং এই জয়কে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে আগামী দিনেও জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দকে শক্তিতে রূপান্তর করে বাংলাদেশের যুবারা আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাবে এমনটি কাম্য।

সর্বোপরি বলতে চাই, নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ- এই বিজয় অত্যন্ত আনন্দের এবং সুখকর। আগামী দিনের জন্যও অনেক বেশি প্রেরণার। সঙ্গত কারণেই এই বিজয়কে সঙ্গে নিয়ে আগামী দিনগুলোতে দেশের ফুটবল আরও অগ্রসর হবে এবং জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টরাও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বজায় রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে