বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি সঠিক পদক্ষেপ নিন

  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি সঠিক পদক্ষেপ নিন

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি বাড়ছেই। দফায় দফায় দাম বেড়ে বা অনেকদিন ধরেই চড়া দাম বজায় থেকে সাধারণ মানুষের প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি যেন 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হয়ে এসেছে।

কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে সব ধরনের চালের দামও। বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে বাকি সব নিত্যপণ্য। সবজির দাম সামান্য কমলেও স্বস্তি নেই মাছ, মাংস, পেঁয়াজের বাজারে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা কেজিতে, আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। বিশেষজ্ঞরা জানান, বাজারের এমন লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। চাল, শাকসবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্নআয়ের মানুষের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ সৃষ্টি করায় তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাজার বিশ্লেষকরা পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় সময়মতো পদক্ষেপ নিতে না পারার সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, সিন্ডিকেটগুলো পরিস্থিতির সুবিধা নিয়ে ভোক্তাদের ওপর আরও বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। চাল, শাকসবজি, ডিম এবং ব্রয়লার মুরগির দাম গত এক মাসে অস্বাভাবিক বেড়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও ক্রমাগতভাবে বাড়ছে লাগামহীনভাবে। বাজার পরিস্থিতি এমন যে, দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি বলেছেন, অন্তর্র্বর্তী সরকার পণ্য বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আগের সরকারের আমলারাই রয়ে গেছে এবং ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ আছে। তাই নিত্যপণ্যের দাম কমছে না।

এটা সত্য, ৫ আগস্টের পর পণ্যের দাম কমেছিল। কয়েকদিন পর সিন্ডিকেট দেখল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই ফাঁকে তারা আবার দাম বাড়িয়ে দিল। আবার অনেক পণ্য আমদানি করা হচ্ছে তারপরও দাম কমছে না সিন্ডিকেটের কারণে। অবাক ব্যাপার হচ্ছে, বেশ ক'দিন ধরে ডিমের হালি ৬০ টাকা। ডিমের বাজার তদারকির উদ্যোগ নিতেই সিন্ডিকেট ডিম সরবরাহ বন্ধ করেছিল। এর সরল অর্থ হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ডিকেট। মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সারাদেশে দাম ঠিক করে দেয় সিন্ডিকেট। এখন অবশ্য ডিমের দাম কমেছে। তবে ব্যবসায়ীদের একটি বড় প্রবণতা হচ্ছে, তারা একটি পণ্যের দাম কমালে তিনটি পণ্যের দাম বাড়ায়। এটা তাদের ব্যবসায়িক অপকৌশল এবং জনগণের পকেট কাটার হীন মানসিকতা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্য সরকার সম্প্রতি জেলাপর্যায়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর আগেও সরকার চিনি, আলু এবং পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক হ্রাস করলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। আমরা মনে করি, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারলে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে