চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় ৮২ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এই সময়ে ৯২৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে- যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৮২ কোটি ডলার। অর্থাৎ এবার তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৭৮ কোটি ডলারের। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৬ শতাংশ। আলোচ্য তিন মাসে ২৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। শুধু সেপ্টেম্বরে ৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আবার ঘুরে একটু দাঁড়িয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ২৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি। তবে আলোচ্য সময়ে হোমটেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি কমেছে। গত তিন মাসে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের হোমটেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। এই খাতের রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া, পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়। এতে সাভারের আশুলিয়ার বড় শিল্পগোষ্ঠীর কারখানাগুলোতে গত এক মাস উৎপাদন ব্যাহত হয়। গাজীপুরের কিছু কারখানায় বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। তারপরও গত মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর তথ্যানুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে ৩৮৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৩২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তুলনায় গত মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৫৪ কোটি ডলার। যদিও রপ্তানির হিসাবের মধ্যে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) প্রচ্ছন্ন রপ্তানি এবং নমুনা (স্যাম্পল) রপ্তানির তথ্যও সংযুক্ত আছে। এই পরিমাণ অবশ্য খুবই কম হয়ে থাকে। সংস্থাটির হিসাবে প্রচ্ছন্ন ও নমুনা রপ্তানিও যুক্ত থাকে। সেগুলো বাদ দিয়েই মূলত প্রকৃত রপ্তানি হিসাব বের করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলার। এই রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। আশার কথা, নতুন ক্রয়াদেশ আসছে। তবে গ্যাস সংকটের কারণেও বিভিন্ন অঞ্চলের বস্ত্র কারখানা ধুঁকছে। ব্যাংকিং জটিলতায় ভুগছেন অনেক উদ্যোক্তা। এসব সংকট ও সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে, আরও গতিশীল করতে হবে রপ্তানি আয়।