সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২
পাঠক মত

ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলো প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এমন বিপর্যয় যা মানুষের জীবন, সম্পদ ও পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দুর্যোগগুলোর মধ্যে ভূমিকম্প একটি। বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত ভূমিকম্পপ্রবণ হয়ে উঠছে। মাঝেমধ্যেই ছোট, মাঝারি ও তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে দেশ। এসব ভূমিকম্পে তেমন বেশি ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, ঘন ঘন সংঘটিত হওয়া এমন ভূমিকম্প- জীবনবিধ্বংসী ভূমিকম্পেরই বার্তা বহন করছে। ২০২৪ সাল থেকে ৬০টিরও বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে বিজ্ঞানীরা। এসব ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটি ৪ দশমিক শূন্য মাত্রার উপরে এবং ৩১ টি ৩ দশমিক শূন্য থেকে ৪ দশমিক শূন্যের মধ্যে ছিল। ভারতীয় এবং বার্মার দুটি টেকটোনিক পেস্নট স্পর্শ করায় বাংলাদেশ ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারতীয় পেস্নটটি উত্তর-পূর্ব দিকে এবং বামির্জ পেস্নটটি পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে। সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা দুইটি পেস্নটের সংযোগস্থল যা, সাবডাকশন জোন নামে পরিচিত। শত শত বছর ধরে সাবডাকশন জোনে ফাঁকা টেকটোনিক পেস্নটের মাঝে বিপুল পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত রয়েছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, গত ৭৫ বছরে কোন বড় ভূমিকম্প না হওয়ায় এবং সাবডাকশন জোনের শক্তির মুক্ত হওয়ার প্রবল প্রচেষ্টায় ৮ মাত্রারও বেশি প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে দেশ। আর সেটারই আগাম বার্তা দিচ্ছে ঘন ঘন সংঘটিত হওয়া ভূমিকম্পগুলো। এমন ভূমিকম্প সংঘটিত হলে সারাদেশে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ঢাকা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ারও আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে, ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ঢাকা শহরে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ভবন ধসে পড়বে। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারাবে। ঢাকা শহরের তীব্র ঘনবসতি, ভবনগুলোর ভঙ্গুর অবকাঠামো, দুর্বল বিল্ডিং কোডের প্রয়োগ, নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি ভূমিকম্পের ঝুঁকিকে মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি করেছে। দ্রম্নত ভূমিকম্প-সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, জরুরি পরিকল্পনা ও সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালী বিল্ডিং কোড মেনে চলার মতো কার্যকর পদক্ষেপগুলো না নিলে একটি ভয়াবহ দৃশ্যের সম্মুখীন হতে পারে দেশ।

মোছা. শেফাতুন নেছা

শিক্ষার্থী,পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে