বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
স্মরণীয়-বরণীয়

আলেকজান্ডার ফ্লেমিং

  ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং

স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ছিলেন একজন স্কটিশ চিকিৎসক, অণুজীব বিজ্ঞানী, বিশ্বের প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক 'বিংশ শতকের বিস্ময়' পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য সমধিক পরিচিত। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের তার এই আবিষ্কার পরবর্তী সময়ে বেঞ্জিলপেনিসিলিন তথা পেনিসিলিন-জি নামে নামাঙ্কিত হয়। 'পেনিসিলিয়াম রুবেনস' নামক এক শ্রেণির ছত্রাক নিঃসৃত তরলকে বিশুদ্ধ করে তৈরি করেন অ্যান্টিবায়োটিক শ্রেণির ওষুধ। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে অপর দুই ইংরেজ রসায়ন বিজ্ঞানী হাওয়ার্ড ফ্লোরি ও অ্যার্নেস্ট চেইনের সঙ্গে যৌথভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে নাইট উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে টাইম পত্রিকার সমীক্ষায় বিশ শতকের সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য একশো ব্যক্তিত্বদের অন্যতম বিবেচিত হন। এছাড়াও ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের বিবিসি টেলিভিশনের সমীক্ষায় গ্রেট ব্রিটেনের একশ' ব্যক্তিত্বদের অন্যতম ও ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে এসটিভি টিভি চ্যানেলের বিচারে রবার্ট বার্নস ও উইলিয়াম ওয়ালেসের পর তিনি তৃতীয় গ্রেটেস্ট স্কট নির্বাচিত হন। আলেকজান্ডার ফ্লেমিংয়ের জন্ম ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ আগস্ট যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের আয়ারশায়ারের দারভেল নামক এক গ্রামে। ফ্লেমিং-এরা পুরুষানুক্রমে ছিলেন কৃষক। লেখাপড়ার চল ছিল না পরিবারে। পাঁচ বছর বয়সে লেখাপড়া শুরু করেছিলেন নিতান্তই সাধারণ গ্রাম্য স্কুলে অসাধারণ মেধা ও তীক্ষ্ণ ধীশক্তির আলেকজান্ডার। কিন্তু সাত বৎসর বয়সে তার পিতা মারা যান। মায়ের তত্ত্বাবধানে সবরকম দুঃখ কষ্ট দূর করে মনোবল লাভ করেন। ১০ বছর বয়সে ভর্তি হন দারভেলের এক হাইস্কুলে। দু'বছরের স্কলারশিপ পেয়ে সেখান থেকে এক নামকরা আবাসিক বিদ্যালয় কিলমারনক একাডেমিতে ভরতি হন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে অণুজীববিজ্ঞানে স্বর্ণপদকসহ বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে তিনি প্যাথোলজির প্রধান অধ্যাপক ড. আলমোর্থ রাইটের দ্বারা প্রভাবিত হন। অধ্যাপক রাইটের প্রতিভা, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আর মানবপ্রেম ফ্লেমিং-কে আকৃষ্ট করে এবং তার সহকারী হয়ে যান। সেন্ট মেরি'স মেডিকেল স্কুলের প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুতে ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লেফটেন্যান্ট হন এবং ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে রয়াল আর্মি মেডিকেল কর্পসে ক্যাপ্টেন হিসেবে কাজ করেন। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাণুবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নির্বাচিত হন এবং ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তিন বছরের জন্য এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর হন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ আলেকজান্ডার ফ্লেমিং লন্ডনে তার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে