বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

সুধীরবরণ মাঝি, শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় হাইমচর, চাঁদপুর
  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ
দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

পোশাক শিল্প ও পাট শিল্পের জন্য প্রয়োজন- সুদক্ষ অথচ সস্তা শ্রমিকের।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা হচ্ছে- দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম নিয়ামক।

প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে- শিল্প।

শিল্পের আকার অনুসারে একে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়- ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প।

ক্ষুদ্র শিল্পের- কম শ্রমিক ও স্বল্প মূলধন প্রয়োজন।

বৃহৎ শিল্পে- ব্যাপক অবকাঠামো, প্রচুর শ্রমিক ও বিশাল মূলধন প্রয়োজন।

বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে আমদানি নির্ভর একটি দেশ।

মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ আসে- পোশাক রপ্তানি থেকে।

প্রধান আমদানি অংশীদার হচ্ছে চীন এবং মোট আমদানির শতকরা প্রায় ১৭ ভাগ।

চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অসম বাণিজ্যক সম্পর্ক বিদ্যমান।

বাংলাদেশ রপ্তানি করে- চা, চামড়া, জুতা, হিমায়িত খাদ্য, কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্য।

প্রশ্ন : ঢাকার অদূরে ডেমরা থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ইপিজেড, জুটমিলস, কটনমিলস উলেস্নখযোগ্য।

ক. কৃষিকাজ কোন ধরনের কর্মকান্ড?

খ. বাণিজ্য ঘাটতি বলতে কী বোঝায়?

গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত শিল্পগুলো কোন শ্রেণির ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উক্ত অঞ্চলে শিল্প গড়ে ওঠার প্রাকৃতিক কারণ বিশ্লেষণ কর।

উত্তর :

ক. কৃষিকাজ প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড।

খ. একটি দেশের রপ্তানি অপেক্ষা আমদানি ব্যয় বেশি হলে, তাকে বাণিজ্য ঘাটতি বলে। যেমন বাংলাদেশ ২০১১-১২ অর্থবছরে আমদানি করে ৩৪.৮১ মিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের পণ্য। আর রপ্তানি করে ২৪.৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের পণ্য। রপ্তানি অপেক্ষা আমদানি ব্যয় বেশি ছিল ১০.৫১ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের এ অবস্থানকে বাণিজ্য ঘাটতি বলে।

গ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত শিল্পগুলো হলো ইপিজেড, জুটমিলস ও কটনমিলস। এই শিল্পগুলো বৃহৎ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। কারণ বৃহৎ শিল্প গড়ে ওঠার জন্য ব্যাপক অবকাঠামো প্রয়োজন হয় এবং এখানে এ ধরনের অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আলোচ্য শিল্পগুলো ডেমরা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। আলোচ্য শিল্পগুলোতে রপ্তানিজাত দ্রব্য প্রক্রিয়াকরণ, বস্ত্র, পাট ও পাটজাত দ্রব্য তৈরি, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করা হয় যার জন্য প্রচুর শ্রমিক ও বিশাল মূলধনের প্রয়োজন হয়। বৃহৎ শিল্প শহরের কাছাকাছি গড়ে ওঠে এবং আলোচ্য শিল্পগুলোও ঢাকার অদূরে গড়ে উঠেছে। সুতরাং বৈশিষ্ট্যের নিরিখে উদ্দীপকে উলিস্নখিত শিল্পগুলো বৃহৎ শিল্প।

ঘ.ঢাকার অদূরে ডেমরা থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলে শিল্প গড়ে ওঠার প্রাকৃতিক কারণসমূহ হলো :

জলবায়ু : শিল্প স্থাপনে জলবায়ুর প্রভাব বলতে তাপ, বৃষ্টিপাত, জলীয় বাষ্প ও আর্দ্রতা ইত্যাদির প্রভাবকে বোঝানো হয়। উক্ত অঞ্চলের জলবায়ু শিল্প গড়ে ওঠার অনুকূলে। ওই অঞ্চলটি শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে হওয়ায় জলবায়ু সমভাবাপন্ন থাকে। শ্রমিকরা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করতে পারে। আবার জুটমিলস ও কটনমিলস স্থাপনের জন্য আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন হয়, যা এ অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বিরাজ করে।

শক্তি সম্পদের সান্নিধ্য : শক্তি সম্পদের ওপর শিল্পের অবস্থান নির্ভরশীল। কারণ শিল্প কারখানা চালানোর জন্য শক্তির প্রয়োজন। উক্ত অঞ্চলের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঘোড়াশালে তাপবিদু্যৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। পর্যাপ্ত শক্তি সম্পদের সরবরাহ থাকায় এ অঞ্চলে শিল্প গড়ে উঠেছে।

কাঁচামালের সান্নিধ্য : শিল্প কারখানার জন্য কাঁচামালের প্রয়োজন। উক্ত অঞ্চলে পাট, তুলা প্রভৃতি কাঁচামালের সহজলভ্যতার জন্য সেখানে এসব শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে।

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, প্রাকৃতিক নিয়ামকের আনুকূল্যেই নারায়ণগঞ্জে শিল্প গড়ে উঠেছে।

প্রশ্ন : আবেদ এবং শাহেদ দুই বন্ধু। আবেদ বেড়িবাঁধ এলাকায় ৮০টি বিদেশি গরু নিয়ে একটি দুগ্ধ খামার তৈরি করেছে। অপরদিকে শাহেদ আশুলিয়ায় একটি পোশাক শিল্পকারখানা তৈরি করে, যার পোশাকের বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

ক. অর্থনৈতিক কার্যাবলি কত প্রকার?

খ. বাণিজ্যিক ভারসাম্যতা বলতে কী বোঝায়?

গ. আবেদের খামারটি কোন ধরনের কর্মকান্ডের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. শাহেদের শিল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে কিরূপ ভূমিকা পালন করে উত্তরের সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর।

উত্তর :

ক. অর্থনৈতিক কার্যাবলি তিন প্রকার।

খ. পণ্যদ্রব্যের আদান-প্রদান হলো বাণিজ্য। এ আদান-প্রদান দেশের ভিতর বা বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই হতে পারে। সাধারণত দেশের বাইরের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ভারসাম্যতা প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়। দেশের চাহিদা মেটাতে অন্য দেশ থেকে পণ্য সামগ্রী আনা হলে তাকে আমদানি বাণিজ্য বলে। আর নিজ দেশের পণ্য যখন অন্য দেশে পাঠানো হয়, তাকে রপ্তানি বাণিজ্য বলে। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ যখন প্রায় সমান হয় তাকে বাণিজ্যিক ভারসাম্য বলে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য প্রায়ই সমান থাকে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান থাকে।

গ. আবেদের খামারটি প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অন্তর্ভুক্ত। জীবনধারণের জন্য মানুষ সরাসরি প্রকৃতির সাথে যেসব কাজে লিপ্ত হয় সেগুলোকে প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বলে। কৃষিকাজ, পশুপালন, খনিজ উত্তোলন, মৎস্য শিকার, কাঠ চেরাই, কৃষিকাজ ইত্যাদি প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। অনুন্নত দেশে এ কর্মকান্ডের পরিমাণ বেশি। উদ্দীপকে আবেদ বেড়িবাঁধ এলাকায় ৮০টি বিদেশি গরু নিয়ে খামার গড়ে তোলে, এটি সরাসরি প্রকৃতির সাথে জড়িত। আবেদের খামার থেকে মূলত কৃষিপণ্য সংগ্রহ বা উৎপাদন করা হয়। তার খামারের মূল ভিত্তি হচ্ছে ভূমি, গরু ও শ্রম। আবেদের খামারটি মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে। তাই আবেদের খামারটি প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অন্তর্ভুক্ত।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে