আজকের যায়যায়দিন

বাংলাদেশের সিনেমা মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক। ফলে সিনেমার ঘোষণা-মহরত থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রচারকার্যও ঢাকাতেই সম্পন্ন হয়। অথচ নির্মাতা দীপংকর দীপন এবার তার নতুন ছবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন কুমিলস্না থেকে!

অবশ্য, এর পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণও আছে। সেটা হলো- দীপনের ছবিটির প্রেক্ষাপট কুমিলস্নার এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। সে জন্য শুক্রবার কুমিলস্নায় কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের মুক্তমঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে ছবির লোগো পোস্টার উন্মোচন করা হয়েছে। ছবিটির নাম 'ছাত্রী সংঘ'। এটি প্রযোজনা করছে নতুন প্রতিষ্ঠান রজত ফিল্মস।

প্রকাশিত লোগো পোস্টারে তিনজন নারীর ছায়া ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যাদের হাতে রয়েছে পিস্তল। সঙ্গে বলা হয়েছে, 'উপমহাদেশের একমাত্র সশস্ত্র নারী বিপস্নবী দল কুমিলস্নার ছাত্রী সংঘ। শান্তি, সুনীতি আর ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া নেপথ্যের মহানায়িকা প্রফুলস্ন নলিনী ব্রহ্ম'র অবিশ্বাস্য অভিযান নিয়ে ঐতিহাসিক থ্রিলার।'

প্রসঙ্গত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন কুমিলস্নার তিন ছাত্রী শান্তি, সুনীতি ও প্রফুলস্ন। আরও জানা যায়, তাদের মিছিলে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সহধর্মিণী আশালতা সেনগুপ্তা বা প্রমীলা দেবীও মাঝেমধ্যে থাকতেন। তাদের অভিযান এত প্রবল ছিল যে, খোদ সুভাষ চন্দ্র বসু তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কুমিলস্নায়। সেই ঐতিহাসিক উপাখ্যান এবার পর্দায় তুলে ধরছেন নির্মাতা দীপন।

সব সময় ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিই :ফারিণ

তার ভাষ্য, 'গল্পটা জানতে পেরে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম! কিছু ছাত্রী মিলে একটা পূর্ণ বিপস্নবী দল গড়ে তুলেছিল এবং এমন এক অপারেশন করেছিল, যা ভয় পাইয়ে দিয়েছিল অত্যাচারী ব্রিটিশ রাজকে। এ রকম সশস্ত্র নারী বিপস্নবী দল ভারত উমহাদেশে আর কোথাও নেই। অথচ এত বড় ঘটনা ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে গেছে। আমি অনেক অনুসন্ধান করে খুঁজে পাই রীতিমত টানটান উত্তেজনার এক অসাধারণ সিনেমাটিক পস্নট। কুমিলস্নার এই গল্পের সূচনা কুমিলস্নায় হওয়াতে আমি খুব আনন্দ বোধ করছি; এখানকার মাটির ঋণ হয়ত কিছুটা শোধ হবে।'

লোগো পোস্টার উন্মোচনে সংশ্লিষ্টরা লোগো পোস্টার উন্মোচনে সংশ্লিষ্টরা 'ছাত্রী সংঘ'র এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন কুমিলস্নার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অজানা অধ্যায়কে সামনে তুলে আনার এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান তিনি।

সিনেমাটির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন সৌনাভ বসু। ছবিতে কারা অভিনয় করছেন, সেটা আপাতত গোপন রাখতে চান সংশ্লিষ্টরা। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। আর শুটিং শুরু হবে কোরবানির ঈদের পর। কাজ শেষে চলতি বছরই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দীপংকর দীপনের প্রথম ছবি 'ঢাকা অ্যাটাক' মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। এরপর তিনি নির্মাণ করেছেন 'অপারেশন সুন্দরবন' ও অন্তর্জাল' নামের দুটি ছবি। সবগুলো ছবিতেই বিভিন্ন মিশন আর দেশপ্রেমের নির্যাস রেখেছেন তিনি।